চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে জাপান

জিনজিয়াংয়ের আটক শিবির
ছবি : রয়টার্স

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর জাতিসত্তার লোকজনের ওপর দমনপীড়নের ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার মুখে রয়েছে দেশটি। কিন্তু এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে চীন। এবার এ বিষয়ে মুখ খুলেছে জাপান। চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাপান। বুধবার দেশটির একজন শীর্ষ সরকারি মুখপাত্র এ কথা বলেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  

জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ক্যাটসুনোবু কাটো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘জাপান বিশ্বাস করে যে স্বাধীনতা, মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আইনের শাসন যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে সর্বজনীন, তা চীনেও যেন নিশ্চিত করা হয়।’

জাতিসংঘের অনুমান, জিনজিয়াংয়ে ১০ লাখের বেশি মুসলমানকে আটক করা হয়েছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, জিনজিয়াংয়ে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

চীনের পক্ষ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দেশটির পক্ষ দাবি করা হয়, জিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ সরবরাহ করার পাশাপাশি চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে।

গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ গোপন নথির বরাতে জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর জাতিসত্তার লোকজনের ওপর দমনপীড়নের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জিনজিয়াংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও উগ্রবাদ দমনে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।

‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর ওই নথিতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিতর্কিত অভিযান পরিচালনার অবিশ্বাস্য সব তথ্য উঠে আসে। উইঘুরদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, তাদের ওপর নজরদারি এবং সি চিন পিংসহ বিভিন্ন নেতার অপ্রকাশিত বক্তব্যও রয়েছে ওই নথিতে।

বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, জিনজিয়াংয়ের ওই আটক শিবিরগুলোয় ১০ লাখের বেশি উইঘুর জাতিসত্তার মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই মুসলমান। তবে চীনের দাবি, এগুলো আটক শিবির নয়, এগুলো সংশোধনাগার।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিবিসি জানায়, চীনে বন্দিশিবিরের শত শত উইঘুর মুসলমানের ভাগ্য কীভাবে নির্ধারিত হচ্ছে, সে-বিষয়ক একটি নথি পেয়েছে তারা। ওই নথিতে পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলের তিন হাজারের বেশি ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে। এতে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তথ্য বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বিবিসির কাছে আসা নথিটিতে ৩১১ জন ব্যক্তি সম্পর্কে তদন্তের বিস্তারিত রয়েছে। এতে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড, ধর্মীয় অভ্যাস, আত্মীয়, প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের তালিকা রয়েছে।