টিকাদানে পিছিয়ে চীন

ছবি: রয়টার্স

শার্লি শি একটি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁকে তিনবার টিকা নিতে বলা হয়েছে। তবে আরেকটু দেরিতে টিকা নিতে চান শার্লি। তিনি মনে করেন চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।কাছাকাছি সময়ের মধ্যে তাঁর বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। তাই টিকা নিতে তিনি তাড়াহুড়ো করতে চান না।

এএফপির খবরে জানা যায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বেচ্ছাসেবী একটি সংস্থার সহযোগিতায় পরিচালিত আওয়ার ওয়ার্ল্ড ডেটার হিসাব বলছে, যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ জনে ৩২ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ জন টিকা পাচ্ছে। সে তুলনায় পিছিয়ে আছে চীন।

চীনে টিকা উন্নয়নের কাজ চলছে। শি বলছেন, টিকা সে দেশে সহজলভ্য। তবে তিনি এখনই টিকা নেওয়ার প্রয়োজন দেখছেন না।

বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ঝং নানশান বলেন, চীন আগামী জুন মাসের মধ্যে ১৪০ কোটি মানুষের ৪০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত দেশটিতে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ জনগণকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

চীনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ঝাং ওয়েনহং এক ফোরামে বলেন, লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সাত মাস ধরে প্রতিদিন চীনে এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া প্রয়োজন। ঝাং বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত দেশটিতে ৫ কোটি ২০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। চীনে টিকাদানের এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলছেন ঝাং।

প্যারিসভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক এশিয়া প্রোগ্রাম অ্যাট ইনস্টিটিউট মন্টাইনের পরিচালক ম্যাথিউ ডাচ টেল অবশ্য বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে জরুরি টিকা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তবে চীনে জরুরি ভিত্তিতে টিকার প্রয়োজনীয়তা ততটা নেই।
কঠোর লকডাউন ও ব্যাপক পরীক্ষার মাধ্যমে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে।

বহুজাতিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইপিএসওএস বলছে, গত জানুয়ারিতে চীনের ৮৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ জানান, তাঁরা টিকা নিতে চান। তবে কত দ্রুত তাঁরা টিকা নিতে চান, তা জানা যায়নি।

বেইজিংয়ের একটি ক্লিনিকের এক চিকিৎসক জানান, তিনি সব কর্মকর্তাকে টিকা দিতে চেয়েছিলেন। তবে অনেকেই কার্যকারিতা নিয়ে আরও বেশি তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত টিকা নিতে আপত্তি জানিয়েছেন। গত বছর চীনে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।