পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর নাকচ চীনের

সাম্প্রতিক এক সামরিক কুচকাওয়াজে চীন একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্ল্যাটফর্ম প্রদর্শন করেফাইল ছবি: রয়টার্স

পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম—এমন একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর নাকচ করেছে চীন। গতকাল সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত শনিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, চীন নতুন একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস আরও জানায়, লংমার্চ রকেটে করে ক্ষেপণাস্ত্রটি মহাকাশে পাঠায় বেইজিং। লক্ষ্যবস্তুর দিকে অগ্রসর হওয়ার আগে ক্ষেপণাস্ত্রটি পৃথিবীর কক্ষপথের নিচের দিক দিয়ে পরিভ্রমণ করে। ক্ষেপণাস্ত্রটি শেষ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছায়নি। লক্ষ্য থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে গিয়ে পড়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি।

গতকাল চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন ধরনের মহাকাশযান প্রযুক্তি যাচাই করার জন্য গত জুলাই মাসে বেইজিং একটি নিয়মিত পরীক্ষা চালায়।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘যেটি পরীক্ষা করা হয়েছে, সেটি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল না। সেটি ছিল একটি মহাকাশযান। মহাকাশযান ব্যবহারের খরচ কমানোর জন্য এ পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

অতীতে অনেক দেশই বেইজিংয়ের মতো একই ধরনের পরীক্ষা চালিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ঝাও লিজিয়ান।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনটি ঠিক, নাকি বেঠিক—এমন প্রশ্নের জবাবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ‘বেঠিক’ বলে মন্তব্য করেন।

গতানুগতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম। তবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র অত্যাধুনিক। এটি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে।

বেইজিং পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে বলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে খবর আসার পর চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। খবরে বলা হয়, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি দেখে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা রীতিমতো বিস্মিত।

চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ অন্তত পাঁচটি দেশ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় ইতিমধ্যে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করেছে। তবে তারা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তের পাশাপাশি তা ঠেকাতে সক্ষম কি না, সে বিষয় নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের যে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, তাতে তা শনাক্ত ও ঠেকানো বেশ কঠিন।

আরও পড়ুন