চীনে শীতকালীন অলিম্পিক বর্জনে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। তাঁর ভাষ্য, অ্যাথলেটদের এ অলিম্পিকে অংশ না নেওয়া চীনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। শুক্রবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
বিশ্বের ১৮০টির বেশি মানবাধিকার সংগঠন আগামী বছর বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীতকালীন অলিম্পিক বর্জন করতে বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। তারা এ অলিম্পিক আয়োজনের জন্য চীনের বিকল্প খোঁজার আহ্বানও জানায় আইওসির প্রতি।
দ্য ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস এ আসরকে ‘গণহত্যার অলিম্পিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে। তিব্বতি, উইঘুর, হংকংবাসী ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী কয়েকটি দল যৌথভাবে এক খোলা চিঠিতে এ আহ্বান জানিয়েছিল।
ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের প্রতিনিধি জুমরেতেই আরকিন বলেন, ‘আইওসি আমাদের দুঃখকে একটুও আমলে নেয়নি। এখন সংশ্লিষ্ট দেশগুলো কী করে, তা দেখার বিষয়। এ গণহত্যার অলিম্পিক পরিহার করে তারা সামান্যতম মানবিকতা দেখাবে, এটাই আশা।’
এ ব্যাপারে আইওসির জ্যেষ্ঠ সদস্য কানাডার নাগরিক ডিক পাউন্ড বলেন, এটা চীনের কোনো খেলা নয়, এটা আইওসির খেলা। অ্যাথলেটদের এ অলিম্পিকে অংশ নিতে না দিলে আদতে চীনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কোনো সরকারের নীতি সমর্থন করে আইওসি এ আসর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়নি।
অন্যদিকে চীনের আয়োজনের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পাউন্ড বলেন, `আপনি খেলার সময় আপনার রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নিতে পারেন..., আপনি কনস্যুলার কর্মকাণ্ড স্থগিত করতে পারেন, নানাভাবে একটি দেশ এ আয়োজনের প্রতি অনীহা প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু আয়োজন বাতিল করার কোনো অর্থ দাঁড়ায় না।'
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের জিনজিয়ান অঞ্চলে কথিত ‘পুনঃশিক্ষণ’ শিবিরে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নিগ্রহ চালানো হচ্ছে। সেখানে উইঘুর নারীরা পদ্ধতিগত ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, চীন সরকার ধীরে ধীরে উইঘুরদের ধর্মীয়সহ অন্যান্য স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। জিনজিয়ানের শিবিরে উইঘুর নর–নারীকে সব সময় কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। শিবিরে তাঁদের ওপর নানা নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়। সেখানে তাঁদের প্রজননক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। জোর করে তাঁদের বিশেষ মতবাদ শেখানো হচ্ছে।
জিনজিয়ান অঞ্চলের ‘পুনঃশিক্ষণ’ শিবির বেশ বড়। স্বাধীন হিসাবমতে, এই শিবিরে ১০ লাখের বেশি উইঘুর নারী-পুরুষ বন্দী আছেন। সেখানকার ব্যবস্থা বেশ গোপনীয়। ফলে শিবিরের ভেতরে কী ঘটে, তার খবরাখবর তেমন বাইরে আসে না।