হংকংয়ের ধনকুবের জিমি লাইকে কারাদণ্ড

হংকংয়ে ‘মিডিয়া মোগল’ হিসেবে পরিচিত জিমি লাই।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী ‘মিডিয়া মোগল’ হিসেবে পরিচিত জিমি লাইকে ১৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করার সঙ্গে যুক্ত থাকার দায়ে আজ শুক্রবার তাঁকে দণ্ডিত করা হয়। আজ বিবিসির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
দুই বছর আগে গণতন্ত্রের পক্ষে বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন জিমি। ৭৩ বছর বয়সী জিমি ‘অ্যাপল ডেইলির’ প্রতিষ্ঠাতা। পত্রিকাটি বেইজিংয়ের কট্টর সমালোচক।

জিমিকে ছাড়াও আজ আদালতে আরও কয়েকজনকে দণ্ডিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৮২ বছরের প্রবীণ প্রচারক মার্টিন লি, ৭৩ বছর বয়সী আইনজীবী মার্গারেট রয়েছে। তবে মার্গারেটের সাজা স্থগিত করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট ও ৩১ আগস্ট হংকয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে এসব দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
গণতন্ত্রপন্থীদের বিরুদ্ধে চীনের দমন–পীড়ন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে এ রায় এল।

চলতি সপ্তাহে অ্যাপল ডেইলি জেলখানা থেকে পাঠানো জিমি লাইয়ের হাতে লেখা একটি চিঠি প্রকাশ করে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সাংবাদিক হিসেবে ন্যায়ের জন্য কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। যতক্ষণ না আমরা অন্যায় প্রলোভন দ্বারা অন্ধ হব, যতক্ষণ না আমরা আমাদের মাধ্যমে অসৎ মানুষদের সুযোগ করে দেব, ততক্ষণ পর্যন্ত বুঝতে হবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেই যাচ্ছি।’


জিমি লাইকে ১৮ আগস্টের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ১২ মাসের এবং ৩১ আগস্টের বিক্ষোভের কারণে আট মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত জানিয়েছেন, দুটি শাস্তি একসঙ্গে চলবে। তবে দুই মাস তাঁকে আলাদা করে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও ছয়টি অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা আইনে। এ আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।


জিমি লাইকে গত আগস্টে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে তাঁর মালিকানাধীন পত্রিকা অ্যাপল ডেইলির কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় প্রায় ২০০ পুলিশ। জব্দ করে নথিপত্রভর্তি বেশ কিছু বাক্স। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে নিজ বাসায় সিএনএনের তিনি বলেছিলেন, তিনি বছরের পর বছর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন। তিনি এই লড়াই চালিয়ে যাবেন। কেননা, স্বাধীনতা ছাড়া একজন মানুষের কাছে কোনো কিছুই অবশিষ্ট থাকার নয়।

হংকংয়ে নিয়ন্ত্রণ পোক্ত করতে গত ১ জুলাই নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে বেইজিং। গণতন্ত্রপন্থীরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন, হংকংবাসীর যে স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন অবশিষ্ট ছিল, সেটাও ধূলিসাৎ করবে আইনটি।


নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কেন্দ্রীয় সরকারের পতন, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাতমূলক যেকোনো কাজ শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।