হুয়াওয়ে কর্মকর্তা কানাডা ছাড়ার পরই ২ কানাডীয়কে মুক্তি দিল চীন

মাইকেল কোভরিগ ও মাইকেল স্প্যাভোর
ফাইল ছবি: এএফপি

চীনে বন্দী থাকা দুই কানাডীয়কে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কানাডার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার দুজনকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। খবর বিবিসির।

গতকালই কানাডা ছেড়ে যান চীনা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী মেং ওয়ানঝো। যুক্তরাষ্ট্রের কৌঁসুলিদের সঙ্গে এক চুক্তির পর তাঁকে কানাডা ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এরপরই মুক্তি পেলেন দুই কানাডীয় মাইকেল কোভরিগ ও মাইকেল স্প্যাভোর। মাইকেল কোভরিগ সাবেক কূটনীতিবিদ ও মাইকেল স্প্যাভোর ব্যবসায়ী।

২০১৮ সালে দুই কানাডীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে চলতি বছরের আগস্টে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে স্প্যাভোরকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন চীনা আদালত। তবে কোভরিগের মামলায় রায় এখনো প্রকাশিত হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে চীনা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী মেং ওয়ানঝো কানাডায় আটক হওয়ার পরপরই কোভরিগ ও স্প্যাভোরকে আটক করে চীন। এই গ্রেপ্তারকে বিচারবহির্ভূত আখ্যা দেয় কানাডা। তবে হুয়াওয়ে কর্মকর্তাকে আটকের প্রতিশোধ হিসেবে এই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে চীন।

দুই কানাডীয়কে মুক্তির বিষয়ে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, দুজন দেশে তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরে আসছেন, এটি একটি খুশির খবর। শনিবারই তাঁরা কানাডার মাটিতে পা রাখবেন। পথে তাঁদের সঙ্গী হয়েছেন চীনে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত ডোমিনিক বার্টন।

চীনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনও। তবে তিনি এটাও বলেছেন, দুই কানাডীয়কে বিচারবহির্ভূতভাবে আড়াই বছরের বেশি সময় বন্দী থাকতে হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার মুক্তির পর মেং ওয়ানঝো সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত তিন বছরে আমার জীবন উল্টে গেছে। তবে অন্ধকারের শেষে আলো আসবেই। সারা বিশ্বের মানুষের কাছ থেকে যে শুভেচ্ছা পেয়েছি, তা আমি কখনো ভুলব না।’

যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর মেংকে গ্রেপ্তার করে কানাডা। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ইরানে হুয়াওয়ে লেনদেন করেছিল, এমন অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে গ্রেপ্তারে কানাডার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, স্কাইকম নামের এক অনানুষ্ঠানিক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইরানের টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করছে হুয়াওয়ে। এতে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেওয়া নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হয়েছে।