৬ বছরের শিশুরা শিখবে জাতীয় নিরাপত্তা আইন

প্রতীকী ছবি

হংকংয়ে ছয় বছর বয়সী শিশুদের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে অপরাধ কী, তা শেখানো হবে। একই সঙ্গে নতুন শিক্ষানীতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে শিশুদের আচরণ পর্যবেক্ষণ এবং শিক্ষার্থীরা গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে সমর্থন করছে কি না, সে বিষয়ে নজর রেখে প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে নতুন এই দিকনির্দেশনা প্রকাশ করে। সঙ্গে একটি অ্যানিমেশন ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে শিক্ষার্থীদের কাছে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

গত বছর জুনে হংকংয়ে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারি করে চীন। তাদের যুক্তি, গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের কারণে নগরীতে যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, তা নিয়ন্ত্রণে এই আইন অত্যন্ত জরুরি।

নতুন আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কেন্দ্রীয় সরকার পতন, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাতমূলক যেকোনো কাজ শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

ভিডিওতে হংকংয়ের চলমান উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির জন্য এই জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োজন, তা তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয় ‘আমরা সবাই জানি হংকং আমাদের দেশের একটি অপরিহার্য অংশ।’

নতুন দিকনির্দেশনার আওতায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের কীভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে ও শ্রদ্ধা জানাতে হবে, তা শেখানো হবে। একই সঙ্গে পিপলস লিবারেশেন আর্মি হংকংকে কীভাবে সুরক্ষা দিয়ে আসছে, তা–ও জানাতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি ভূগোল ও জীববিজ্ঞানের মতো বিষয়ের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এমনকি জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে, এমন কোনো বই স্কুলের গ্রন্থাগারে থাকা চলবে না।

তবে নতুন এই দিকনির্দেশনার সমালোচনা করেছেন হংকং প্রফেশনাল টিচার্স ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট তিন ফং-চাক। তিনি বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে স্কুলগুলোর প্রতি সরকারের আস্থা নেই। নতুন এ নির্দেশনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ককে ধ্বংস করে দেবে।’

হংকং চীনের আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। আগে অঞ্চলটি যুক্তরাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিল। ১৯৯৭ সালে চুক্তির মাধ্যমে হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই চুক্তিতে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। চুক্তি অনুসারে হংকংয়ে আলাদা বিচার বিভাগ, আইনসভা ও নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, হংকং এক দেশ, দুই পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছিল। নতুন আইনে সেই মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে।