কলকাতায় প্রবীণের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা বলছে পরিবার

মৃত্যুপ্রতীকী ছবি

ভারতের দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকায় গতকাল রোববার সকালে এক প্রবীণ ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম দিলীপ কুমার সাহা (৬৮)। তাঁর পরিবারের দাবি, তিনি এক সপ্তাহ ধরে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তথা এনআরসি আতঙ্কে ভুগছিলেন এবং সেই কারণেই আত্মহত্যা করেছেন।

দিলীপ সাহা রিজেন্ট পার্কের আনন্দপল্লি পশ্চিমের বাসিন্দা ছিলেন। ঢাকুরিয়ার একটি স্কুলে কর্মচারী হিসেবে তিনি কাজ করতেন।

গতকাল সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় দিলীপ সাহার স্ত্রী আরতি সাহা তাঁকে ডাকতে থাকেন। পরে কোনো সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীর সহায়তায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দিলীপের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দিলীপ সাহা ১৯৭২ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে কলকাতায় আসেন। পরিবারের দাবি, এনআরসি কার্যকর হতে পারে—এই আশঙ্কায় সম্প্রতি তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর ভারতীয় ভোটার কার্ড, আধার ও প্যান কার্ড ছিল। তবু তিনি ভাবতেন, তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।

দিলীপ সাহা একটি ‘সুইসাইড নোট’ রেখে গেছেন বলে জানা গেলেও পুলিশ এখনো তা প্রকাশ করেনি। প্রতিবেশীদের অনেকে বলছেন, তিনি স্নায়ুজনিত সমস্যায় ভুগতেন ও মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন।

ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। ভোটার তালিকা সংশোধনের নাম করে তারা এনআরসির পথ প্রশস্ত করছে।

কলকাতা পুলিশ দিলীপ সাহার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ হিসেবে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।