যেকোনো দেশের অর্থনীতিতে পর্যটনশিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পর্যটন ঘিরে স্থানীয় লোকজনের আর্থসামাজিক অবস্থায়ও ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। তবে কথায় আছে, কোনো বিষয়েই বাড়াবাড়ির ফল ভালো হয় না। এমনই এক পরিস্থিতির মুখোমুখি ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার হলস্ট্যাট শহর।
হলস্ট্যাট ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। পাহাড়ের কোলে ঐতিহ্যবাহী সুন্দর বাড়িগুলো দারুণভাবে তৈরি করা। এর সামনে রয়েছে স্বচ্ছ পানির লেক। সব মিলিয়ে ছবির মতো সুন্দর একটি শহর এটি।
তবে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকের কারণে শহরটির বাসিন্দারা বিরক্ত। মাত্র সাত শর মতো বাসিন্দার শহরটিতে পর্যটন মৌসুমে দৈনিক পর্যটকের সংখ্যা ১০ হাজারও ছাড়িয়ে যায়। তাই পর্যটকের সংখ্যায় লাগাম টানতে রীতিমতো রাজপথে নেমেছেন স্থানীয় লোকজন।
বাসিন্দারা সীমিতসংখ্যক পর্যটককে এখানে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বিকেল পাঁচটার পর শহরে পর্যটক বাস প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও দাবি তুলেছেন।
পর্যটনশিল্প হলস্ট্যাটের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক, এ বিষয়ে দ্বিমত নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে শহরটিতে পর্যটকের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বলছেন তাঁরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ২০০৬ সালের একটি রোমান্টিক ধাঁচের সিনেমার কিছু অংশের চিত্রায়ণ এই শহরে হয়েছিল। এতে চীনসহ এশিয়ার দেশগুলোতেও শহরটির জনপ্রিয়তা ব্যাপক বেড়ে যায়। শহরটির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ধরে রাখতে এখানে বেড়াতে এসে পর্যটকেরা প্রচুর সেলফি তোলেন। ফলে পর্যটনস্থলে ভিড় লেগেই থাকে। পর্যটকদের হইচইয়ে অসুবিধা হয় বাসিন্দাদের।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে পর্যটকদের সেলফি তোলা ঠেকাতে সম্প্রতি বিশেষ ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। পর্যটকদের সেলফি তোলার জনপ্রিয় স্থানটিতে উঁচু কাঠের বেড়া বসিয়ে দেয় তারা।
ইউরোপে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের গন্তব্যগুলোর একটি এখন হলস্ট্যাট। শহরের বাসিন্দারা বলছেন, এখানে খুব বেশি দর্শনার্থী। বিশেষ করে এক দিনের ভ্রমণে আসা পর্যটক অনেক। তারা বড় বাসে করে শহরে এসে থাকেন।
ভেনিসসহ ইউরোপের অন্য পর্যটন শহরগুলোর মতো মাত্রাতিরিক্ত পর্যটকের চাপে ভুগছে হলস্ট্যাটও। শহরটির আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা আগামী দিনগুলোতে বাসিন্দাদের জন্য মিশ্র অনুভূতি হয়েই থাকবে।