চীন এখন সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল আনছে রাশিয়া থেকে

ফাইল ছবি

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলো। তবে উল্টো পথে হেঁটেছে চীন। গত মে মাসে দেশটি যে পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে রাশিয়া থেকে। এত দিন সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করত বেইজিং। খবর রয়টার্স ও এএফপির
গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে। এর জেরে বিশ্বের প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের অবনতি হলেও ব্যতিক্রম চীন। এই অভিযানের সরাসরি নিন্দাও জানায়নি দেশটি। এমনকি ইউক্রেনে হামলা শুরুর অল্প কয়েক দিন আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বেইজিংয়ে স্বাগত জানান চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তখন চীন–রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্কে কোনো সীমারেখা না থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়।

আজ সোমবার চীনা কাস্টমসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে রাশিয়া থেকে প্রায় ৮৪ লাখ ২০ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানি করেছে চীন। এর দাম ৭৪৭ কোটি ডলার। আগের মাসে রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে চীন যে অর্থ দিয়েছিল, তার চেয়ে এটা প্রায় ১০০ কোটি ডলার বেশি। অপর দিকে চীন মে মাসে সৌদি আরব থেকে তেল আমদানি করেছে ৭৮ লাখ ২০ হাজার টন।

শুধু চীন নয়, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার পর দেশটি থেকে জ্বালানি আমদানি বাড়িয়েছে ভারতও। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার হালনাগাদ তথ্য বলছে, রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক ছিল জার্মানি। সেখানে গত দুই মাসে জার্মানিকে টপকে এই স্থান দখল করেছে ভারত।

এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলা আরও জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। এ অঞ্চলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর সেভেরোদোনেৎস্কের বেশির ভাগ এলাকা কয়েক দিন আগেই দখলে নিয়েছিল রুশ বাহিনী। এবার তাঁরা ইউক্রেনের সেনাদের হটিয়ে শহরসংলগ্ন মেতিওলকাইন গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বলে লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইদাই আজ জানিয়েছেন।

সেভেরোদোনেৎস্কের ভেতরেও চলছে রাশিয়ার হামলা। শহরের আজত রাসায়নিক কারখানায় অবিরাম গোলা হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লুহানস্কের গভর্নর। সেখানে শত শত বেসামরিক লোক আশ্রয় নিয়েছে।

এ পরিস্থিতির মধ্যে আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যদেশগুলোর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ইইউতে যোগ দিতে ইউক্রেনের আবেদনের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। এই সম্মেলন ঘিরে রাশিয়ার হামলা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

এদিকে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য পরিবহনে রাশিয়ার বাধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে সোচ্চার হয়েছে ইইউ। জোটের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, বিশ্বের মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনে লাখ লাখ টন খাবার আটকে রাখা হয়েছে। এটা হচ্ছে আসল ‘যুদ্ধাপরাধ’।