নেদারল্যান্ডসে হোটেল কোয়ারেন্টিন থেকে পালালেন দম্পতি

হোটেল কোয়ারেন্টিনের প্রতীকী ছবি
ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উড়োজাহাজে করে নেদারল্যান্ডসে ফেরার পর করোনা শনাক্ত হওয়া যাত্রীদের অনেককে হোটেল কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। গতকাল রোববার কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় সেখান থেকে পালিয়ে যান এক দম্পতি। এতে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যায় ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে নেদারল্যান্ডসের সীমান্ত পুলিশ। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত শুক্রবার আমস্টারডামের সিফল বিমানবন্দরে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা দুটি ফ্লাইটে ৬১ যাত্রীর করোনা শনাক্ত করে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হতে তাঁদের হোটেল কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, আক্রান্ত যাত্রীদের মধ্যে ১৩ জনের শরীরে ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ওই ঘোষণা শোনার পরই কোয়ারেন্টিন থেকে পালিয়ে যান এক দম্পতি।

পুলিশের মুখপাত্র স্ট্যান ভারবার্ট এএফপিকে বলেন, ‘সিফলের দ্য রয়েল নেদারল্যান্ডস মেরেচাউসির (জাতীয় পুলিশ বাহিনী) সদস্যরা সন্ধ্যায় এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছেন। তাঁরা একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।’ ভারবার্ট জানান, ওই দম্পতির মধ্যে স্বামীর বয়স ৩০ বছর। তিনি স্প্যানিশ নাগরিক। আর ২৮ বছর বয়সী স্ত্রী পর্তুগিজ। স্পেনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা একটি উড়োজাহাজের ভেতর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উড়োজাহাজটির স্পেনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।

ভারবার্ট বলেন, নেদারল্যান্ডসের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয়ে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে সীমান্ত পুলিশ। জননিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কর্তৃপক্ষের কাছে ওই জুটিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তবে ওই দম্পতি কীভাবে হোটেল ছেড়ে পালিয়েছিলেন এবং কীভাবে তাঁদের পালানো বিষয়টি জানা গেল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নেদারল্যান্ডসের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র স্টেফানি ভ্যান ওয়ারডেনবার্গের ভাষ্য অনুযায়ী, পালিয়ে যাওয়া দম্পতির একজন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন এবং তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। অপরজনের করোনা শনাক্ত না হলেও কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। দুজনকেই আইসোলেশনে ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁদের একই হোটেলে রাখা হয়নি।

শুক্রবার নেদারল্যান্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার ওই দুই ফ্লাইটে ৬০০ যাত্রী ছিলেন। প্রায় সারা দিন তাঁদের বিমানবন্দরে রেখে করোনা পরীক্ষা চালানো হয়। এর কয়েক ঘণ্টা আগে নেদারল্যান্ডসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিউগো দে জং বলেছিলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকা সবাই যেন বিধি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করা হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওই দুই ফ্লাইটে আসা করোনায় আক্রান্ত যাত্রীদের বেশির ভাগকে হোটেল কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকজনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে যাঁদের করোনা শনাক্ত হয়নি, তাঁদেরও বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।