ন্যাটোর হস্তক্ষেপ চায় পোল্যান্ড, বেলারুশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পথে ইইউ

প্রচণ্ড শীতের মধ্যে পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে কয়েক হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী আটকা পড়েছেন
ফাইল ছবি: এএফপি

পোল্যান্ড ও বেলারুশের সীমান্তে আটকে পড়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঘিরে চরম মানবিক সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংকট নিরসনে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রতি ‘কার্যকর পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি। অন্যদিকে এই সংকটের জন্য বেলারুশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। খবর রয়টার্স ও এএফপির

ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী হাজারো মানুষ বেলারুশ হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পোল্যান্ডে ঢোকেন। এরপর ইউরোপের উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোয় প্রবেশের চেষ্টা করেন তাঁরা। গত সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করে। এর পর থেকে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে সেখানে কয়েক হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী আটকা পড়েন। সংঘাতে নিহত হন শিশুসহ প্রায় ১০ জন।

সংকট পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে হলেও এতে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বশক্তিগুলো। পোল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর সদস্য। অন্যদিকে বেলারুশ সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। তাই এই সংকট এখন বহুজাতিক রূপ নিয়েছে।

ন্যাটোর উদ্দেশে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি বলেন, ‘শুধু প্রকাশ্যে উদ্বেগ জানালেই সংকটের সমাধান হবে না। এখন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ন্যাটোর সনদে এর পথ বলা আছে।’

ন্যাটোর সনদে বলা হয়েছে, সদস্যদেশগুলোর ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়লে জোটের পক্ষ থেকে পরামর্শ প্রদান এবং তা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া যাবে। এই ধারা মেনে এখন সীমান্ত বিরোধ ও মানবিক সংকট নিরসনে সামরিক জোট ন্যাটোর হস্তক্ষেপ চায় পোল্যান্ড।

আরও পড়ুন

এদিকে বেলারুশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে হাঁটছে ইইউ। ইউরোপীয় এই জোটের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তের এখনকার পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য, বিপজ্জনক। এটা থামাতে হবে। অসহায় মানুষকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।’

ইইউর পূর্ব সীমান্তে সংকট শুরুর পর গতকাল রোববার প্রথমবারের মতো বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির মাকেইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন জোসেফ বোরেল। এ সময় মাকেইকে নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বোরেল। এ বিষয়ে মাকেই সাংবাদিকদের বলেন, চলমান সংকট সমাধানের পথে এই নিষেধাজ্ঞা হিতে বিপরীত হতে পারে।

আরও পড়ুন

পোল্যান্ড ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, সীমান্তে এই সংকটের পেছনে বেলারুশে তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সরকারের দায় রয়েছে। আর পেছন থেকে ইন্ধন জোগাচ্ছে মস্কো। তবে পশ্চিমাদের এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই সংকটের শুরু থেকে তিনি লুকাশেঙ্কোর পাশে আছেন। আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সংকট সমাধানের জন্য বেলারুশ ও ইইউর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পুতিন।