ফেসবুকের ব্যবহার সীমিত করল রাশিয়া

ফ্যাক্ট-চেকিং এবং কনটেন্ট লেবেলিং বন্ধ করতে অস্বীকার করেছে ফেসবুক।
ছবি : এএফপি

ইউক্রেনে অভিযান নিয়ে মস্কো-সমর্থিত বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির কর্তৃপক্ষের অবস্থানে নাখোশ ক্রেমলিন। এ কারণে দেশটিতে ফেসবুক ব্যবহারের সুযোগ সীমিত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পুতিন সরকার। বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ পর্যবেক্ষণকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকোমনাডজোর ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করা এবং রুশ নাগরিকদের অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘনের জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করেছে মস্কো।

তবে ফেসবুক রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপ্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য-পরীক্ষা ও তাতে লেবেল যুক্ত করার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর এক দিন পর পুতিন সরকার দেশে ফেসবুকের ব্যবহার সীমিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এ পদক্ষেপে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও ইনস্টাগ্রামে প্রভাব পড়েছে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়।

এদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ, রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল জাভেজদা ও ক্রেমলিনপন্থী দুটি নিউজ পোর্টালের ওপর গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক কর্তৃপক্ষের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে রাশিয়ার যোগাযোগ পর্যবেক্ষণকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা। রাশিয়ার অভিযোগ, তাদের অনুরোধ অবহেলা করেছে মেটা।

মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ বলেন, ‘রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ আমাদের স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং ও খবরে লেবেল যুক্ত করার কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়। আমরা তাদের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছি।’ তবে তিনি বলেছেন, রুশরা মেটা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুক, সেটা তাঁরা চান।

নিক ক্লেগ বলেন, ‘সাধারণ রুশ নাগরিকেরা নিজেদের কথা বলতে ও বিক্ষোভ সংগঠিত করতে অ্যাপ ব্যবহার করছেন।’

তবে অধিকাংশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রাশিয়ার ইতিবাচক তথ্য তুলে ধরে ইউক্রেনে সেনাদের এগিয়ে যাওয়ার খবর দিচ্ছে। এ ছাড়াও রাশিয়ার হামলাকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে উল্লেখ করছে তারা।

গত বৃহস্পতিবার মেটার পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে বিশেষ অপারেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে।

রাশিয়ায় অবশ্য ফেসবুকের মতো নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ভিকে ও ওডনোক্লাসনিকি রয়েছে। তবে সেখানে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা বেশি।

ভুয়া তথ্যের লেবেল যুক্ত করা নিয়ে বেশ চাপের মুখে রয়েছে মেটা। এ ধরনের কাজের জন্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বাইরের ‘ফ্যাক্ট চেকার’ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে তারা।

ইতিমধ্যে মস্কো দেশীয় গণমাধ্যমের ওপর চাপ বাড়িয়ে বলেছে, ইউক্রেন নিয়ে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা হলে সেগুলো বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরেক সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম টুইটারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা দল প্ল্যাটফর্মে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা রুখতে কাজ করছে।