বের হবে ডায়ানার আলোচিত সাক্ষাৎকারের পেছনের কাহিনি

প্রিন্সেস ডায়ানা
ছবি: রয়টার্স

বিবিসি প্যানারোমাকে ১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ রাজবধূ প্রিন্সেস ডায়ানার দেওয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সাক্ষাতকার গ্রহণকারী মার্টিন বশির ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ওই সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন। এখন বিবিসি সেই সাক্ষাৎকাররে সত্য সন্ধানে তদন্ত করবে।

এ তদন্তকে ‘সঠিক পথের একটি পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন ডায়ানার ছেলে ও ডিউক অব কেমব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম। রাজবধূ ডায়ানার প্যানারোমা সাক্ষাৎকার ঘিরে থাকা ঘটনার সত্য উদ্‌ঘাটনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিবিসি।

প্রিন্সেস ডায়ানা ১৯৯৭ সালে এক মোটর দুর্ঘটনায় মারা যান। এর আগে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্টিন বশির নিয়েছিলেন আলোচিত-সমালোচিত সাক্ষাৎকারটি। ডায়ানার ভাই অভিযোগ করে বলেছেন, ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখিয়ে ওই সাক্ষাৎকার দিতে রাজি করিয়েছিলেন বশির।

কেনসিংটন প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডায়ানার বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম এ তদন্তকে প্রাথমিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীন এ তদন্ত সঠিক পথের দিকে একটি পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে অবশ্যই প্যানারোমা সাক্ষাৎকারের পেছনের সত্য ও বিবিসির সেই সময়কার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের পদক্ষেপের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

গতকাল বুধবার বিবিসি ঘোষণা দিয়ে বলেছে, দেশটির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি লর্ড ডাইসনকে এ তদন্তের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিবিসির মহাপরিচালক ডিম ডেভি বলেছেন, ওই ঘটনা সম্পর্কে সত্য উদ্‌ঘাটনে বিবিসি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেই স্বাধীন তদন্ত কমিশন তৈরি করেছে।

ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেন্সার এ মাসের শুরুর দিকে ওই ঘটনার স্বাধীন তদন্তের দাবি করেন। ডায়ানার সঙ্গে ওই সাক্ষাৎকারকে নিছক অসততা বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বশির তাঁকে ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখান এবং তাঁর বোনের কাছাকাছি যেতে সক্ষম হন।

প্রিন্সেস ডায়ানা
ফাইল ছবি : এএফপি

বিবিসির মহাপরিচালক ডিম ডেভি বলেছেন, ওই ঘটনা সম্পর্কে সত্য উদ্‌ঘাটনে বিবিসি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেই স্বাধীন তদন্ত কমিশন তৈরি করেছে।

এ মাসের শুরুর দিকে ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেনসার স্বাধীন তদন্তের দাবি জানান। স্পেনসার বলেন, ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিতে ‘চরম অসততার’ আশ্রয় নেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইলে ছাপানো ডেভকে দেওয়া স্পেনসারের চিঠিতে বলা হয়েছে, বশির তাঁকে ব্যাংকের কিছু ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়েছিলেন। যেখানে বলা হয়েছিল, নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে রাজপরিবারের দুই জ্যেষ্ঠ সদস্যকে ডায়ানার গোপন তথ্য জানানোর জন্য অর্থ দেওয়া হয়েছে। আর এগুলো দেখার পরই স্পেনসার তাঁর বোন ডায়ানার সঙ্গে বশিরের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

আর্ল স্পেনসার বলেন, ‘ওসব কাগজ না দেখানো হলে আমার বোনের সঙ্গে বশিরের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে দিতাম না।’

কেনসিংটন প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডায়ানার বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম এ তদন্তকে প্রাথমিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীন এ তদন্ত সঠিক পথের দিকে একটি পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে অবশ্যই প্যানারোমা সাক্ষাৎকারের পেছনের সত্য ও বিবিসির সেই সময়কার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের পদক্ষেপের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

ডেইলি মেইলকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে স্পেনসার আরও অভিযোগ করেন, প্যানারোমার রিপোর্টার বশির তাঁর সঙ্গে বৈঠকে রাজপরিবারের একাধিক জ্যেষ্ঠ সদস্যের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ভুয়া ও মানহানিকর অভিযোগ তুলে ধরেন। ডায়ানার কাছে পৌঁছাতে নিজেকে আরও বিশ্বস্তু হিসেবে তুলে ধরতেই এসব কাজ করেছিলেন বশির।

বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রিন্সেস ডায়ানা
ফাইল ছবি

ডায়ানার ব্যক্তিগত চিঠি খুলে ফেলা, গাড়ি বহরে নজরদারি এবং ফোনে আড়িপাতার মতো মিথ্যে তথ্য দিয়েছিলেন বশির।

বশির (৫৭) এখন বিবিসি নিউজের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। কিছুদিন আগে তাঁর হার্ট সার্জারি হয়েছে। তিনি কোভিড–১৯ এও আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর্ল স্পেনসারের অভিযোগ নিয়ে তাই তাঁর কোনো মন্তব্য বিবিসির প্রতিবেদনে নেই।

গতকাল বুধবার বিবিসি ঘোষণা দিয়ে বলেছে, দেশটির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি লর্ড ডাইসনকে এ তদন্তের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্যানারোমার সেই সাক্ষাৎকারে ডায়ানা বলেছিলেন, ‘বিয়েতে আমদের মধ্যে তিনজন ছিল।’ ডায়ানা এ কথার মাধ্যমে কামিলা পার্কারের সঙ্গে প্রিন্স চার্লসের সম্পর্ককে ইঙ্গিত করেছিলেন।

আর যে সময় এই সাক্ষাৎকার তিনি দিয়েছিলেন তখন ডিভোর্স না হলেও তিনি প্রিন্স চার্লসের কাছে থেকে আলাদা থাকতেন। ডায়ানা মারা যান ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৬।

সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয় ১৯৯৫ সালের ২০ নভেম্বর। এর কিছুদিন পরেই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানাকে চিঠি লিখে বিবাহবিচ্ছেদের আদেশ দেন।