যুদ্ধ থামানোর আহ্বান রুশ ধনকুবেরদের

রাশিয়ার ধনকুবেররা সতর্ক করে বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ না থামলে খাদ্যসংকট তীব্র হতে পারেছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো খাদ্যসংকট নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আশঙ্কার কথা বলে আসছিল। এবার সেই সংকটের কথা স্বীকার করলেন রাশিয়ার ধনকুবেররা। তাঁরা সতর্ক করে বলছেন, এই যুদ্ধ না থামলে খাদ্যসংকট তীব্র হতে পারে।

বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট নিয়ে গতকাল সোমবার কথা বলেছেন সার ও কয়লা ব্যবসায়ী ধনকুবের আন্দ্রেই মেলনিচেনকো। তিনি বলেন, এই যুদ্ধের ইতি টানতে হবে। কারণ, যুদ্ধের ফলে দ্রুত সারের দাম বাড়ছে। তাই কৃষকেরা নিজেদের সারের চাহিদা মেটাতে পারবেন না।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা শুরুর পর রাশিয়ার যেসব ধনকুবের সরাসরি যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে কথা বলেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মিখাইল ফ্রিডম্যান, পিওত্র আভেন ও ওলেগ দেরিপাস্কা।

যদিও ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার যেসব ধনকুবেরের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তাঁদের মধ্যে এই ধনকুবেরদের কয়েকজন রয়েছেন। যেমন আন্দ্রেই মেলনিচেনকোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে যা হচ্ছে, তা সত্যি বেদনাদায়ক। দ্রুত সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনা দরকার।

আন্দ্রেই মেলনিচেনকোর জন্ম মূলত বেলারুশে। তাঁর মা ইউক্রেনের নাগরিক। তিনি বলেন, এই যুদ্ধের কারণে সবচেয়ে ক্ষতি হচ্ছে কৃষিজ উৎপাদনের।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার কারণে আরব ও আফ্রিকার কোনো কোনো দেশে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে, তা নিয়ে সম্প্রতি একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়েছে, আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্যসংকট রয়েছে। এ সংকট আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কারণে মিসর, লেবানন, ইয়েমেনসহ আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মানুষের পাতে রুটির সংখ্যা আরও কমতে পারে।

ইউক্রেন ও রাশিয়া—দুই দেশ থেকেই গম আমদানি করে থাকে আরব দেশগুলো। আমদানির ক্ষেত্রে এ দেশ দুটির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল তারা। খাদ্যাভ্যাসের কারণে গমের আটার রুটি এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান খাবার। ফলে যদি এর সরবরাহ ব্যাহত হয়, তবে আরব দেশগুলোয় খাদ্য সরবরাহে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট বলছে, ইউক্রেন সংকটের কারণে যদি গমের সরবরাহ ব্যাহত হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে খাদ্যসংকটের জন্য নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হতে পারে এবং পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতে পারে।

খাবারের দাম যে বাড়তে পারে, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি গত বৃহস্পতিবার বলেন, রাশিয়ার সার রপ্তানিতে যদি পশ্চিমা দেশগুলো সংকটের সৃষ্টি করে, তাহলে সারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খাবারের দামও বাড়তে পারে।