লুহানস্কের স্বাধীনতা আসন্ন: রাশিয়া

রুশ বাহিনী লুহানস্কে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে বলে দাবি ইউক্রেনের।
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী অধ্যুষিত স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র লুহানস্কের ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ নেওয়ার কাছাকাছি যাওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর এ দাবি করেন। একই সঙ্গে লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের স্বাধীনতা আসন্ন বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি। খবর রয়টার্স ও আল-জাজিরার।

তবে মস্কোর দাবি নিয়ে কিয়েভ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলে নেয় রাশিয়া। তখন থেকেই লুহানস্কের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অঞ্চলটির এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর একদিন আগে লুহানস্ককে ‘স্বাধীন রাষ্ট্রের’ স্বীকৃতি দেয় মস্কো।

শুক্রবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী লুহানস্কের স্বাধীনতা আসন্ন।’

এদিকে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী লুহানস্কের সেভারোদনেস্ক শহরে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে। লুহানস্কে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা সবশেষ অঞ্চলের মধ্যে সেভারোদনেস্ক একটি। লুহানস্কের গভর্নর সেরহেই গাইদাই বলেছেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী সেভারোদনেস্কে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি না কতজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কারণ রুশ হামলার শিকার প্রতিটি ভবনে গিয়ে মৃত্যুর হিসাব করে দেখাটা এখন অসম্ভব।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিও বার্তায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অভিযোগ করেন, রুশ সেনাবাহিনী দনবাসের শিল্পাঞ্চল পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, মস্কো হামলা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে বোমা হামলা চালাচ্ছে।

জেলেনস্কি বলেন, দনবাস নরক হয়ে উঠেছে। সহিংস ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বোমা হামলায় সেভারোদনেস্ক এলাকায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। জেলেনস্কি আবারও রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে বলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনীয়দের হত্যার চেষ্টা করছে। যত বেশি সম্ভব ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।

জেলেনস্কি আরও বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী যখন রাজধানী কিয়েভের পূর্বে খারকিভ অঞ্চল মুক্ত করার চেষ্টায় ব্যস্ত, তখন রুশ বাহিনী দনবাসে হামলা আরও জোরদার করেছে। ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে দনবাসের অবস্থান। বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দনবাসে রয়েছে দুটি স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র— লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। যুদ্ধের এই প্রথম ধাপে তারা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয়। ২৯ এপ্রিল দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। রাশিয়ার এ ধাপের যুদ্ধের লক্ষ্য ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পুরো দনবাস দখল। এসব অঞ্চলের দখল পেলে যুদ্ধজয়ের দাবি করবে রাশিয়া।