সুমি ও ইরপিন শহর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
ইউক্রেনের সুমি ও ইরপিন শহরে অস্ত্রবিরতি কার্যকর ও মানবিক করিডর খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এর পরপরই ওই দুই শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার।
রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুমি। বিবিসির প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার বলা হয়েছে, শহরটিতে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের বসবাস। কয়েক দিন ধরেই এ শহরে রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল। গতকাল সোমবার সুমি শহর ও আশপাশের এলাকায় রুশ বিমান হামলায় শিশুসহ ১০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সুমি শহরের আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসন প্রধান দিমিত্র ঝিভিৎস্কি এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে সুমি শহরে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে। এর পরপরই শহরটি থেকে অনেক মানুষ ইউক্রেনের পলতাভা শহরে চলে গেছে। বিবিসি জানিয়েছে, শহরটি থেকে ভারতীয়, চীনাসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়া হবে।
এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পার্শ্ববর্তী শহর ইরপিন থেকেও আজ বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিয়েভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেস্কি কুলেবা জানান, মঙ্গলবার সকালে শহর ছেড়েছে ১৫০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ। শহরটি থেকে বড় পরিসরে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
রুশ হামলার মুখে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের অন্যান্য শহর থেকেও লোকজন নিরাপদ স্থানে পালাতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের সুমি, খারকিভ, মারিউপোল, চেরনিহভ, ইরপিন ও কিয়েভে মানবিক করিডর খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এর ফলে এসব শহরের বাসিন্দা যেখানে খুশি যেতে পারবে। যদিও এর আগে কয়েকবার বেসামরিক লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য যুদ্ধরত দুই পক্ষ একে অপরকে দায়ী করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্দি মঙ্গলবার জানান, রুশ হামলা শুরুর পর ইউক্রেন থেকে ২০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন। হামলা অব্যাহত থাকায় আগামী দিনগুলোয় এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে ইউক্রেনের পাশের দেশ পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষী বাহিনী গতকাল সোমবার জানিয়েছে, সোমবার এক দিনেই ১ লাখ ৪১ হাজারের বেশি মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পোল্যান্ডে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাষ্যমতে, এ যুদ্ধে ৪০ লাখের মতো বেসামরিক মানুষ ইউক্রেন ছাড়তে পারে।