হাঙ্গেরি বেছে নিল পুতিনের বন্ধু অরবানকে

ফিদেজ পার্টি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভিক্টর অরবান
ছবি: রয়টার্স

হাঙ্গেরির সাধারণ নির্বাচনে নিজেকে জয়ী ঘোষণা করেছেন দেশটির জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। গতকাল রোববার দেশটির সাধারণ নির্বাচন হয়। এখন পর্যন্ত ৯৪ শতাংশ ভোট গণনায় অরবানের ডানপন্থী ফিদেজ পার্টি ৫৩ শতাংশ এবং পিটার মারকি-জে নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ৩৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

২০১০ সাল থেকে হাঙ্গেরির ক্ষমতায় ভিক্টর অরবানের ফিদেজ পার্টি। আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণায় বিজয়ী হলে এ নিয়ে টানা চতুর্থবার দলটি ক্ষমতায় আসবে।  

ভিক্টর অরবান রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে কোনো পক্ষেই কথা বলেননি। আর ইউরোপে পুতিনের বন্ধু হিসেবেও পরিচিত তিনি।

বিবিসি বলেছে, ভিক্টর অরবান রাজধানী বুদাপেস্টে সমর্থকদের বলেন, ‘এ এক বিশাল জয়। তাঁরা চাঁদ থেকেও এটা দেখতে পাবে। একই সঙ্গে ব্রাসেলস থেকেও দেখতে পাবে।’ ইইউ জোটের আমলা, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের এত প্রতিপক্ষ কখনো ছিল না।’

ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত আছে হাঙ্গেরির। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষকে হাঙ্গেরি আশ্রয় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেন, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বদলে দেশটির মানুষকে সাহায্য করছে হাঙ্গেরি। এর মাধ্যমে যুদ্ধ থেকে হাঙ্গেরি নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে।

রোববার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে হাঙ্গেরির নারীদের ভোট দিতে দেখা যায়
ছবি: রয়টার্স

হাঙ্গেরি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হলেও ভিক্টর অরবানের (৫৮) সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক ভঙ্গুর। কয়েক বছর থেকে ভিক্টর অরবান ও তাঁর ফিদেজ দল ইইউবিরোধী প্রচার চালাচ্ছে। ইইউ জোটে মনে করে, ভিক্টর অরবান ও তাঁর ফিদেজ পার্টি হাঙ্গেরির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতা খর্ব করে চলেছে।

ভিক্টর অরবান এক যুগ ধরে হাঙ্গেরির ক্ষমতায়। এ সময় তিনি নিজের মতো করে সংবিধান সংশোধন করেছেন। সর্বোচ্চ আদালতের সব পদে নিজের পছন্দের মানুষকে বসিয়েছেন। নিজের স্বার্থে নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছেন। তাই তো নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিরোধীদের মূল স্লোগান ছিল ‘অরবান না ইউরোপ’।

বিরোধী জোটের নেতা পিটার মারকি-জে নির্বাচনী প্রচারণার সময় দাবি তুলেছিলেন, পোল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের মতো হাঙ্গেরির উচিত ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করা। বিরোধীদের অভিযোগ, ভিক্টর অরবানের ফিদেজ মূলধারার ইউরোপ থেকে একঘরে করেছে। গণতন্ত্র, ন্যায়পরায়ণতা ও শিষ্টাচার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।