হামলার বিরুদ্ধে রাশিয়ায় বড় বিক্ষোভ

ইউক্রেনে রাশিয়ায় সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুটে।
ছবি : এএফপি

ইউক্রেনে রুশ সেনাদের হামলা শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। খোদ রাশিয়ায় এই হামলার বিরুদ্ধে ৫৩ শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়ার পুলিশ। এ ছাড়া এই হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। হয়েছে স্পেনের মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা, ইতালির রোম, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ও ক্যানবেরা, জাপানের টোকিও, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, পোল্যান্ডের ওয়ারশ, ইসরায়েলের তেল আবিব, আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেস, কানাডার টরন্টো শহরে।

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম গার্ডিয়ান-এর খবরে বলা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, তাঁর দেশের নাগরিকদের একটি বড় অংশ এই যুদ্ধে সমর্থন করে। কিন্তু ওই দিন বিকেলেই ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। পুলিশের হুমকি উপেক্ষা করে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।

রাশিয়ার পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ওভিডি-ইনফো নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৩টি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে ১ হাজার ৮০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশই মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের। এই দুই শহরে বড় জমায়েত হয়েছিল।

রাশিয়ায় বিক্ষোভে যাঁরা অংশ নেন, তাঁরা সবাই যুদ্ধের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন। মস্কোয় এমন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন আলেকসান্দার বেলভ। তিনি বলেন, ‘পুতিন মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। আমার ধারণা ছিল, একবিংশ শতাব্দীতে এমন কোনো যুদ্ধ দেখব না।’

আরেকজন বিক্ষোভকারী শিক্ষক নিকিতা গোলুবেভ (৩০) বলেন, ‘আমার দেশ ইউক্রেনে যা করছে, তাতে আমি বিব্রত। সত্যি কথা বলতে, আমি বাকরুদ্ধ। যুদ্ধ সব সময় ভয়ের। আমি এই যুদ্ধ চাই না।


কানাডার টরন্টো শহরে যাঁরা বিক্ষোভে অংশ নেন, তাঁদের অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘পুতিনকে থামাও, যুদ্ধ বন্ধ করো’। এই বিক্ষোভের সময় টরন্টোর মেয়র জন টরি ইউক্রেনের পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বড় বিক্ষোভ হয়েছে বুয়েনস এইরেসে। সেখানে শত শত ইউক্রেনীয় বিক্ষোভে অংশ নেন। এই বিক্ষোভে অংশ নেন আনতোনোভস্ক। তিনি বলেন, তাঁর মা এখন ইউক্রেনের ওদেসা শহরে রয়েছেন। গতকাল শনিবার তাঁর বোমার শব্দে ঘুম ভেঙেছে। মাসহ তাঁর অনেক বন্ধুই বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন।

স্পেনের মাদ্রিদে প্রায় ১ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বার্সেলোনার বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারী। বেলজিয়ামের ব্রাসেলস, সাইপ্রাসের নিকোশিয়া, গ্রিসের রাজধানী এথেন্সসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল সিডনিতে বিক্ষোভ হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সরকার যাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আওতা বাড়ায়, সেই দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন টোকিওতে যাঁরা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন, তাঁরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার স্থায়ী সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।