জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আইনি লড়াইয়ে সুইস নারীদের ঐতিহাসিক জয়

ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সুইজারল্যান্ডের প্রবীণ নারীদের সংগঠন সিনিয়র ওমেন ফর ক্লাইমেট প্রোটেকশনের সদস্য অ্যানে মাহরের ও রোজমেরি ওয়েডলার-ওয়াল্টি। আজ মঙ্গলবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গেছবি: রয়টার্স

ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার আদালত আজ মঙ্গলবার এক রায়ে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়ে সুইজারল্যান্ড সরকার দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের (ইসিএইচআর) এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক কোনো মামলার বিচারের ক্ষেত্রে নজির হয়ে থাকবে।

সুইজারল্যান্ডে একদল প্রবীণ নারী ৯ বছর আগে এই মামলা করেছিলেন। ওই নারীদের বেশির ভাগেরই বয়স সত্তরের কোঠায়। মানবাধিকার আদালতে তাঁদের অভিযোগ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবদাহ দেখা দিচ্ছে। বয়স ও লিঙ্গের কারণে এই দাবদাহের প্রভাবে তাঁরা বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

ক্লিমাসিনিওরিনেন বা সিনিয়র ওমেন ফর ক্লাইমেট প্রোটেকশন নামের একটি অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় আসা এসব নারী অভিযোগ করেন, সুইজারল্যান্ডে দাবদাহের সময় তাঁরা ঘরে থাকতে পারেন না এবং তাঁদের শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। এই অ্যাসোসিয়েশনে দুই হাজারের বেশি নারী রয়েছেন।

ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ শহরে অবস্থিত এই আদালত আদেশে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত কনভেনশনের আওতায় নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে সুইজারল্যান্ড। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সামাল দিতে দেশটির যে নীতিমালা, তাতে ‘মারাত্মক’ ফাঁকফোকর রয়েছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির সরকার।  

আদালতের সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে পাওয়ার পর মামলাকারী নারীদের একজন রোজমেরি ওয়েডলার-ওয়াল্টি বলেন, ‘আমাদের এখনো এটা বিশ্বাস হচ্ছে না। আমাদের আইনজীবীদের জিজ্ঞাসা করেছি, ঠিক শুনেছি তো? জবাবে তাঁরা বলেছেন, আদালতের কাছ থেকে আপনারা সর্বোচ্চটাই পেয়েছেন।’

এদিকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পর্তুগালের ছয় তরুণ ও ফ্রান্সের সাবেক এক মেয়রের করা দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ওই মামলাগুলোয় অভিযোগ করা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যথেষ্ট দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোর সরকার। এতে তাঁদের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।