কোথায় প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস? তিনি কি লজ্জায় মুখ লুকিয়েছেন? যুক্তরাজ্যের বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে নিয়ে এমন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তবে লিজ ট্রাস নিশ্চুপ। তিনি কারও প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না। এমনকি তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা জল্পনা–কল্পনা চলছে। গত সপ্তাহে মাত্র ৩৮ দিন দায়িত্ব পালন করা অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারতেংকে বরখাস্ত করে জেরেমি হান্টকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। লিজ ও কোয়ারতেং মিলে কর কমানোর যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তা গত সোমবার সকালেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন হান্ট। এ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, দেশ আসলে কে চালাচ্ছেন?
এদিকে নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে তিন দিন চুপচাপ ছিলেন লিজ ট্রাস। অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করাসহ বিরোধী লেবার পার্টির নানা প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি। এর বদলে তিনি সামনে ঠেলে দেন মন্ত্রী পেনি মরডান্টকে। তবে গতকাল বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উল্টো ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন লিজ। বলেছেন, আগামী নির্বাচনে টরি দলের নেতৃত্ব দেবেন তিনিই। ট্রাস তাঁর নিজের যে ভুল কার্যক্রম বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করেছে এবং দলের ভেতরে-বাইরে তাঁর অবস্থান অনেকখানি ধসিয়ে দিয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রাস ও তাঁর সাবেক অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারতেং একটি নতুন ‘উন্নয়ন পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেছিলেন। তাতে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ কর ছাড়ের পাশাপাশি জাতীয় বিমা পরিকল্পনা ও স্ট্যাম্প শুল্কে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ব্যাপক সরকারি ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন করা এই পরিকল্পনা স্থবির অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে বলে আশাবাদী ছিলেন ট্রাস। তিনি বলেন, এক মাসের কিছু বেশি সময়ের তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব নিখুঁত ছিল না। কিন্তু তিনি ভুল শুধরেছেন। এই পরিবর্তন না আনলে তা হতো দায়িত্বহীনতা।
সাক্ষাৎকারে লিজ ট্রাস বলেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তিনি এখনো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তা অর্জনে আরও সময় লাগবে।
গত সোমবার জেরেমি হান্ট আগের অর্থমন্ত্রীর পেশ করা ‘মিনি বাজেট’ বাতিল করে সব ধরনের কর বাতিলের ঘোষণা বন্ধ করে দেন। এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান বিনিয়োগকারীরা। তাঁর এ ঘোষণা লিজ ট্রাসের সরকারকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
জ্বালানি নিয়ে লিজ ট্রাসের দুই বছরের যে প্যাকেজ ছিল, হান্ট সেখান থেকে অনেকখানিই পিছু হটেছেন, ফলে জ্বালানির দামে সহায়তা এখন কেবল আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্তই থাকবে।
এদিকে লেবার নেতা কেইর স্টামার প্রধানমন্ত্রীকে সরকারে ব্যাপক শূন্যতা সৃষ্টির অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডেস্কের নিচে লুকিয়েছেন।