শান্তি আনতে জাতিসংঘের মৌলিক সংস্কার চান জেলেনস্কি

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে শান্তি আনতে এবং নতুন কোনো আগ্রাসী যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে জাতিসংঘের মৌলিক সংস্কার দরকার বলে মনে করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। আর এ ব্যবস্থা জাতিসংঘকে অকার্যকর করে ফেলেছে। বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের এক বিশেষ বৈঠকে এসব কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে রাশিয়া একটি। বাকি চার রাষ্ট্র হলো চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। জাতিসংঘের নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তে এসব রাষ্ট্রের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। জেলেনস্কি রাশিয়ার সেই ক্ষমতা খর্ব করার পক্ষে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম সশরীর জাতিসংঘের কোনো অধিবেশনে ভাষণ দিলেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা খর্ব করা এবং নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত সাধারণ পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বাতিল করার ক্ষমতা দিতে হবে। এবারের এ যুদ্ধ সেই বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষেও মত দেন।

জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনকারী রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। আর এ অবস্থা জাতিসংঘকে অকার্যকর করে ফেলছে। যুদ্ধ বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদ কিছুই করতে পারছে না।

জেলেনস্কি এ সময় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ বিস্তৃত করার জন্য পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ‘যখন নিরাপত্তা পরিষদে কোটি কোটি মানুষের স্থায়ী প্রতিনিধি নেই, কিন্তু রাশিয়া আছে, বিষয়টিকে অন্যায় মনে করে ইউক্রেন।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর কাছে নিরাপত্তা পরিষদের পূর্ণ জবাবদিহি থাকতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদের পরিসর বাড়ানো এবং সেখানে এশিয়ার আরও প্রতিনিধিত্ব রাখারও প্রস্তাব দেন জেলেনস্কি। আফ্রিকান ইউনিয়ন, মুসলিম বিশ্ব ও জার্মানিকে সদস্যপদ দেওয়ার পক্ষে আছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রও নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের বিষয়ে তাদের সমর্থনের কথা বলেছে। ঐতিহাসিকভাবে মস্কো ও বেইজিং নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের বিষয়ে সম্মিলিতভাবে বিরোধিতা করে আসছে।

নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে জেলেনস্কির বক্তৃতা দেওয়ার পথ অবশ্য সুগম ছিল না। অধিবেশনের শুরুতে জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনসিয়া জেলেনস্কির ভাষণ দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তোলেন। এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামা। তিনি নেবেনসিয়ার আপত্তির বিষয়ে বলেন, ‘এর একটা সমাধান আছে। আপনার যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে সম্মত হন, তাহলে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি কোনো কথা বলবেন না।’