রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সোমবার, বিশ্বনেতারা যাচ্ছেন লন্ডনে

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সোমবার। এতে যোগ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন। অনেকে ইতিমধ্যে সে দেশে পৌঁছে গেছেন।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন প্রায় দুই হাজার অতিথি। এতে যোগ দিতে শনিবার লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। তবে বাইডেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কোনো প্রেসিডেন্ট রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিচ্ছেন না। যদিও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে বসার পর থেকে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ জন প্রেসিডেন্ট এসেছেন। এর মধ্যে ১৩ প্রেসিডেন্ট রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সফরকালে বাইডেন অবশ্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সরকারপ্রধান হিসেবে এটিই হবে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ।

রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিচ্ছেন জাপান, স্পেন, বেলজিয়াম, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের রাজা–রানিরা। তবে এতে যোগ দিতে সৌদি আরব থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে।

এই আয়োজনে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং কিশান প্রমুখ।

রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ছয়টি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই ছয়টি দেশ হচ্ছে রাশিয়া, মিয়ানমার, বেলারুশ, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও আফগানিস্তান।

সূত্র বলছে, সিরিয়া ও ভেনেজুয়েলার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই যুক্তরাজ্যের। ফলে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আফগানিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংসতা চালানো এবং নির্বাচিত সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বেলারুশের ওপরও। ফলে এই দেশগুলোর প্রতিনিধি থাকছেন না রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়।

তবে যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে রাশিয়া। গত বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, যুক্তরাজ্য শোককে ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইছে। এটি অত্যন্ত অনৈতিক।

হঠাৎ লাইনে রাজা চার্লস ও উইলিয়াম

রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে শনিবারও লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন হাজারো মানুষ। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে রানিকে শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে।

যদিও নতুন করে লাইনে না দাঁড়াতে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লাইনে দাঁড়ানোর পর যেকোনো ব্যক্তির রানির কফিনে শ্রদ্ধা জানাতে সময় লাগছে সাড়ে ১৪ ঘণ্টা।

এই লাইনে দাঁড়ানো মানুষের খোঁজখবর নিয়েছেন রাজা চার্লস ও প্রিন্স উইলিয়াম। এ সময় তাঁরা লাইনে দাঁড়ানো অনেকের সঙ্গে কথা বলেন, খোঁজখবর নেন, হাত মেলান।

রানিকে শ্রদ্ধা জানানোর ওই লাইনের এক প্রান্ত ওয়েস্টমিনস্টারে। আর অন্য প্রান্ত সাউথওয়ার্ক পার্কে। প্রায় আট কিলোমিটার দীর্ঘ এই লাইনের ওয়েস্টমিনস্টারের কাছাকাছি ল্যামবেথ ব্রিজে যান রাজা চার্লস ও প্রিন্স উইলিয়াম। সেখানে কিছুক্ষণ থাকেন তাঁরা।

শুক্রবার রাতে রানির কফিনে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর তিন সন্তান প্রিন্সেস অ্যানি, প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও প্রিন্স এডওয়ার্ড। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রাজা চার্লস। এ ছাড়া শনিবার শ্রদ্ধা জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্থনি আলবানিজ।

আর শুক্রবার শ্রদ্ধা জানান নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। রোববার শ্রদ্ধা জানাবেন জো বাইডেন।