এবার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে চাপে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট
দুর্নীতি বন্ধে সার্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নোভি সাদে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবারও সড়ক ও সেতু অবরোধ করে বড় ধরনের বিক্ষোভ করেছেন হাজারো শিক্ষার্থী। তিন মাস আগে রেলস্টেশনের ছাদ ধসে মারাত্মক দুর্ঘটনার পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়। সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে এ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার ছিল তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সমাবেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিলোস ভুচেভিচসহ উচ্চপদস্থ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ছাদধসের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির দাবি জানিয়েছেন। এর পেছনে সরকারের দুর্নীতি ও অদক্ষতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
দেশটির রাজধানী বেলগ্রেডে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগে বাধ্য হন। এর আগে বিক্ষোভে দেশটির স্কুল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত নভেম্বরে সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর নোভি সাদে একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহত হন, এর জেরে শুরু হয় বিক্ষোভ। একপর্যায়ে তা দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয় এবং পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে প্রতিদিনই দেশটিতে বিক্ষোভ হচ্ছিল। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভে বেশি যুক্ত হয়েছিলেন। বিক্ষোভ থেকে প্রধানমন্ত্রী মিলোস ভুচেভিচের পদত্যাগের দাবি জানান তাঁরা।
শনিবার বিক্ষোভকারীরা সমাবেশের জন্য শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হলে সেখানে থাকা দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী জেলেনা ভুকসানোভিচ বলেন, ‘ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। আমরা ভীত নই। আমরা ছেড়ে দেব না।’
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের আগে নোভি সাদ শহরে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভ শুরু হলে হাজারো শিক্ষার্থী নোভি সাদের সড়কে পতাকা নিয়ে হাজির হন এবং দুর্নীতিবিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় তাঁরা সড়ক ও শহরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু অবরোধ করেন। পরে তাঁরা ফ্রিডম ব্রিজের কাছে জড়ো হন। শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভে শহরের বাসিন্দাদের সঙ্গে ট্রাক্টর নিয়ে কৃষকেরাও যুক্ত হন।
নোভি সাদের আইন বিষয়ের শিক্ষার্থী নেদেলজকা মিজানোভিচ বলেন, ‘এর আগে নোভি সাদ কখনো এমন কিছু দেখেনি। আমি নিশ্চিত, জেন–জিরা পরিবর্তন আনবেই। আমার এ তরুণ প্রজন্মের ওপর বিশ্বাস রয়েছে।’
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা বিক্ষোভ থামাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছেন। তাঁরা এ বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শক্তির মদদের কথা বলছেন।