দাঙ্গা থামাও, বললেন নাহেলের নানি

ফ্রান্সে বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন নাহেলের মা মোনিয়া। ২৯ জুন তোলা
ছবি: রয়টার্স

টানা ছয় দিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল রয়েছে ফ্রান্স। পুলিশের গুলিতে ১৭ বছরের কিশোর নাহেল এম হত্যার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। এ পরিস্থিতিতে নাহেলের পরিবারের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতায় না জড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে নাহেলের পরিবারের দাবি, ফরাসি পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নীতি বদলাতে হবে।

নাহেলের এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে পুরো ফ্রান্সে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ুক, সেটা চায় না পরিবারের সদস্যরা। তবে রাস্তায় তল্লাশিচৌকিতে যেভাবে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেই নীতিতে পরিবর্তন আনা দরকার।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, নাহেলের নানি গতকাল রোববার দাঙ্গা বন্ধ করতে ও সবাইকে শান্ত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

বিএফএম টেলিভিশনকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাহেলের নানি বলেন, ‘থামো, দাঙ্গা করো না।’তিনি দাঙ্গাকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জানালা ভেঙো না। স্কুলে ও বাসে হামলা চালিও না। বাসের যাত্রীদের মধ্যে অনেক মায়েরা রয়েছেন। বাইরে যাঁরা হাঁটছেন, তাঁদের মধ্যে অনেক মা আছেন।’  

নাহেলের নানি নাদিয়া আরও বলেন, তিনি ক্লান্ত। তিনি বলেন, ‘নাহেল মারা গেছে। আমার মেয়ে একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছে। আমার মেয়ের আর কোনো জীবন নেই।’

ফ্রান্সে চলমান এ বিক্ষোভের শুরু গত মঙ্গলবার। ওই দিন রাজধানী প্যারিসের শহরতলির নতেঁর একটি তল্লাশিচৌকিতে নাহেলকে গুলি করে হত্যা করেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভ দমাতে ও লুটপাট বন্ধ করতে ফ্রান্সজুড়ে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়।

এই পরিস্থিতিতে নাহেলের এক স্বজন বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা কখনোই কাউকে ঘৃণা ছড়াতে বা দাঙ্গায় অংশ নিতে বলিনি। ভাঙচুর কিংবা লুটপাট চালাতেও বলিনি। এখন যা চলছে, সেটা নাহেলের জন্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, নাহেলের স্মরণে রাজপথে শান্তিপূর্ণ ‘সাদা মিছিল’ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

নাহেলের ওই আত্মীয় আশা প্রকাশ করে বলেন, তল্লাশিচৌকিতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে ফরাসি কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

নাহেলের মা আলজেরিয়ার বংশোদ্ভূত মোনিয়া বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি শুধু একজনকেই দোষারোপ করি, যিনি আমার ছেলের জীবন নিয়েছেন।’
নাহেলের বেড়ে ওঠা প্যারিসের পশ্চিমে নতেঁ শহরের পাবলো পিকাসো নামের একটি এস্টেটে। এস্টেটটি অভিবাসীবহুল। একমাত্র সন্তান নাহেলকে বড় করেছেন মা। সে পণ্য ডেলিভারির কাজ করত। তার বাবার পরিচয় জানা যায়নি।

গত তিন বছর নাহেল পাইরেটস অব নতেঁ রাগবি ক্লাবে খেলেছে। ওভালে সিটিয়েন নামের একটি সমিতি স্কুলে মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে এমন কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। নাহেলও ওই কর্মসূচিতে অংশ নিত।
নাহেলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই। নতেঁর কৌঁসুলি বলেছেন, তল্লাশিচৌকি পুলিশ থামতে বললে, সে তা করেনি। এরপর নাহেলকে গুলি করা হয়।

আরও পড়ুন