হিটলারের মন্ত্রী গোয়েবলসের বাড়ি বিনা মূল্যে দেওয়া হবে

হিটলারের প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের এই বাড়ি ঘিরে পীড়াদায়ক ইতিহাস রয়েছে। বার্লিন, জার্মানিফাইল ছবি: এএফপি

জার্মান স্বৈরশাসক হিটলারের প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের একটি বাড়ি বিনা মূল্যে দিতে চাইছে বার্লিন সরকার। যুক্তরাজ্যের দ্য টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। সে চিন্তা করে বাড়িটি নিতে আগ্রহী কাউকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার্লিন কর্তৃপক্ষ।

হ্রদের পাশের এই দৃষ্টিনন্দন বাড়ি ঘিরে অবশ্য পীড়াদায়ক ইতিহাস রয়েছে। জার্মানির রাজধানী বার্লিনের উত্তরে নিরিবিলি এলাকায় বাড়িটির অবস্থান।

১৯৩৯ সালে হিটলারের হাত ধরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়ায় জার্মানি। সঙ্গে ছিল মিত্র ইতালি ও জাপান। তাদের অক্ষশক্তি বলা হতো। প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের জোট মিত্রপক্ষ নামে পরিচিত। এই বিশ্বযুদ্ধে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা দেখে বিশ্ববাসী। ইহুদি নিধনে হিটলারের নৃশংসতা এখনো ভয় জাগায়। প্রচারমন্ত্রী হিসেবে গোয়েবলস হিটলারের বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি নাৎসিদের বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়াতে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যম যেমন সংবাদপত্র, রেডিও, চলচ্চিত্র ব্যবহার করে নাৎসিদের নানা বিষয় প্রচারে দক্ষতা ছিল গোয়েবলসের। এ ছাড়া তিনি জার্মানির ভেতর তথ্যপ্রবাহের বিষয়টিও নিয়ন্ত্রণ করতেন। হিস্টোরি ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে স্ত্রী ও ছয় সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন গোয়েবলস।

১৯৩৬ সালে ১৭ হেক্টরের সম্পত্তিতে একটি বাড়ি তৈরি করেন গোয়েবলস। এটি নানা কাজে ব্যবহার করতেন তিনি। বিভিন্ন অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর অভিসারের স্থান হয়ে উঠেছিল বাড়িটি।

বর্তমানে এ বাড়ি বার্লিন সরকারের সম্পত্তি। কিন্তু বাড়িটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নাৎসি শাসনামলের পীড়াদায়ক ইতিহাস ও রক্ষণাবেক্ষণের অধিক ব্যয় নিয়ে বিপদে পড়েছে কর্তৃপক্ষ।

বার্লিনের অর্থমন্ত্রী স্টেফান এভারস বলেন, যিনি বাড়িটির দেখভাল করতে আগ্রহী হবেন, তাঁকে সরকারের তরফ থেকে বাড়িটি উপহার হিসেবে দেওয়া হবে।

গোয়েবলসের এই বাড়িতে ২০০০ সাল থেকে কেউ বসবাস করে না। বার্লিন থেকে ১০ মাইল উত্তরে অবস্থিত বাড়িটি এখন ভগ্নদশায়। এখানকার অনেক জানালা ভেঙে গেছে। অনেক দরকারি জিনিসপত্র খোয়া গেছে। বাড়িটিতে বসবাস করতে হলে তা মেরামত প্রয়োজন।

বাড়িটি ঘিরে এখন নানা রকম প্রস্তাব দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ফেডারেল সরকারের অধীনে বাড়িটিকে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে ব্যক্তিমালিকানায় এটি দেওয়া যেতে পারে।

যদি উপযুক্ত প্রস্তাব না আসে, তবে বাড়িটিকে ভেঙে ফেলার পথে হাঁটবে বার্লিন সরকার। এতে মেরামত করার চেয়ে তাদের খরচ কম হবে।