গর্ভপাত এখন ফ্রান্সে সাংবিধানিক অধিকার

গর্ভপাতের বিষয়টির সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে আনা সংবিধান সংশোধন বিলের ওপর ভোটাভুটি চলার সময় পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে প্ল্যাকার্ড হাতে কয়েকজন নারী।ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে গর্ভপাতকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিল ফ্রান্স। গর্ভপাতের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করতে গতকাল সোমবার দেশটির সংবিধানে একটি সংশোধনী আনা হয়েছে।

গতকাল ফ্রান্সের পার্লামেন্টে পাস হওয়া সংবিধান সংশোধনী বিলের পক্ষে ভোট দেন দেশটির ৭৮০ জন আইনপ্রণেতা। আর বিলটির বিপক্ষে ভোট দেন ৭২ আইনপ্রণেতা। ভোটাভুটির ফল ঘোষণার সময় আইনপ্রণেতারা দাঁড়িয়ে কড়তালির মাধ্যমে ঐতিহাসিক এ মুহূর্তটিকে স্বাগত জানান।

গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৫৮ সালে প্রণীত ফ্রান্সের সংবিধানে ২৫তম সংশোধনী আনা হলো। এর আগে সর্বশেষ ২০০৮ সালে দেশটির সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল।

নারীদের গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার এ ঘটনাকে ফ্রান্সের জন্য গর্বের বিষয় বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে গর্ভপাতের ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার নিয়ে গোটা বিশ্বেই একটা বার্তা পৌঁছাল।

তবে গর্ভপাতের বিষয়টিকে এভাবে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি গর্ভপাতবিরোধী কিছু সংগঠন। এসব সংগঠন ফ্রান্সের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে।

১৯৭৫ সাল থেকে ফ্রান্সে গর্ভপাত বৈধ। তবে দেশটির মানুষ এর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, ফ্রান্সের প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, গর্ভপাত করাবেন কিনা এটা একান্তই একজন নারীর সিদ্ধান্ত। আর নারীর এ অধিকারের সংরক্ষিত করতে সংবিধানে সংশোধন আনা প্রয়োজন।

পার্লামেন্টে বিল পাস হওয়ার পর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত আইফেল টাওয়ারে আলোকিত হয়ে ওঠে একটা বার্তায়। সেই বার্তায় লেখা ছিল, ‘শরীর আমার, সিদ্ধান্তও আমার।’