বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা স্প্যাগেটি
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একদল রসায়নবিদ বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা স্প্যাগেটি তৈরির দাবি করেছেন। এ স্প্যাগেটি চুলের চেয়েও ২০০ গুণ পাতলা এবং আলোর কিছু তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে সরু।
গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যানোস্কেল অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকীতে। নিবন্ধে বলা হয়েছে, নতুন এ স্প্যাগেটি আগের সব পাতলা স্প্যাগেটির রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এর প্রতিটি তন্তু এতটাই পাতলা যে তা সাধারণ ক্যামেরা বা মাইক্রোস্কোপে ঠিকমতো দেখা যায় না। এ জন্য গবেষকেরা স্ক্যানিং ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করেছেন।
প্রায় অদৃশ্য এই স্প্যাগেটি অবশ্য দ্রুত রান্না করে খাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়নি। এতে যে খুব সূক্ষ্ম তন্তু ব্যবহার করা হয়েছে, তা ন্যানোফাইবার নামে পরিচিত। চিকিৎসাক্ষেত্রে এর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।
ময়দার মিশ্রণ ব্যবহার করে গবেষক দলটি ইলেকট্রোস্পিনিং নামের একটি পদ্ধতিতে এই ন্যানোফাইবার তৈরি করেছেন, যার ব্যাস ৩৭২ ন্যানোমিটার। তাঁরা ময়দার মিশ্রণে পানির পরিবর্তে ফরমিক অ্যাসিড ব্যবহার করেছেন, যা শর্করা তৈরির প্রক্রিয়াকে ভেঙে দেয়। এ ছাড়া এ মিশ্রণকে তাঁরা কয়েক ঘণ্টা উত্তপ্ত করেন এবং ধীরে ধীরে ঠান্ডা করেন, যাতে এ থেকে তৈরি তন্তু টেকসই হয়।
গবেষণা প্রবন্ধের সহলেখক অ্যাডাম ক্ল্যান্সি বলেন, ‘স্প্যাগেটি তৈরিতে যেভাবে পানি ও ময়দার মিশ্রণকে ধাতব ফুটোর মধ্য দিয়ে চাপ দিয়ে বের করা হয়, তেমনি এ গবেষণার সময় একই পদ্ধতিতে ময়দার মিশ্রণকে বৈদ্যুতিক চার্জের মধ্য দিয়ে নেওয়া হয়। এটা আসলে স্প্যাগেটিই, তবে তার আকার অনেক ক্ষুদ্র।’
বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি এই ন্যানোফাইবার পানিতে দ্রবীভূত হয়। এটি ন্যানোফাইবারের আরও সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। পরবর্তী প্রজন্মের ব্যান্ডেজ ও কার্বনাইজড সুপারক্যাপাসিটর ইলেকট্রোড হিসেবে একে কাজে লাগানো যেতে পারে। গবেষকেরা বলছেন, ক্ষতের ওপর ড্রেসিং করতে এ ধরনের ন্যানোফাইবার ব্যবহার কার্যকর হতে পারে।