পুনর্মিলনের ৩৫ বছরে কী অর্জন করল জার্মানি

জার্মান পার্লামেন্ট ভবনে উড়ছে দেশটির জাতীয় পতাকাফাইল ছবি: রয়টার্স

জার্মানি তার পুনর্মিলনের ৩৫তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন করছে আজ শুক্রবার। এ সময়কালে ঐক্যবদ্ধ জার্মানি কী অর্জন করল আর কীই–বা বিসর্জন দিল, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আলোচনা চলছে।

অর্জন-বিসর্জনের এসব আলোচনায় কেউ কেউ এমন কথা বলছেন যে এই ঐক্য দিবস শুধু আবেগ দিয়ে উদ্‌যাপন করলে হবে না। বরং বাস্তবতার নিরিখে সবকিছুর বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে।

দিবসটি নিয়ে জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে আলাপ-আলোচনাসহ উদ্‌যাপনের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। তবে জার্মানির সাধারণ নাগরিকদের কাছে দিবসটি এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।

১৯৯০ সালের ৩ অক্টোবর পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির ঐতিহাসিক পুনর্মিলনের বর্ণাঢ্য আয়োজন সম্পন্ন হয়েছিল। দিবসটির ৩৫তম বার্ষিকীতে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট রন্ডসু পত্রিকা লিখেছে, ‘কখনো অতীতকে ভুলে যাবেন না। নইলে ভবিষ্যৎ পুনর্নির্মাণ করতে পারবেন না।’

পত্রিকাটির ভাষ্য, ‘আমরা রাজনৈতিক ঐক্য অর্জন করতে পারি, কিন্তু আসল ঐক্য অর্জন করতে পারিনি। সেখানে পৌঁছানোর জন্য আমাদের সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। আর সেই সচেতনতা-মূল্যবোধ তৈরি করতে আরও উন্মুক্ত আলোচনা প্রয়োজন। এ কারণে আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে।’

এ ক্ষেত্রে কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এনেছে পত্রিকাটি। এগুলো হলো—আমরা কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে চাই? আমাদের বর্তমান কাঠামো কি যথেষ্ট শক্তিশালী? নাকি আরও বাস্তব ও সাহসী সংস্কারের প্রয়োজন?

আরও পড়ুন

দিবসটি ঘিরে জার্মানির বার্লিন–ভিত্তিক টাগেস স্পিগেল পত্রিকা একটি জরিপ প্রকাশ করেছে। দেশব্যাপী অনলাইনে চালানো এই জরিপে উভয় অঞ্চলের ১০ হাজার বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন। জরিপে পশ্চিমের ৬০ শতাংশ ও পূর্বের ৫৮ শতাংশ মানুষ নিজেদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

তবে জরিপে মজুরি, সম্পদ ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে পূর্ব-পশ্চিমের বৈষম্যের দিকটি উঠে এসেছে। তা সত্ত্বেও পুনর্মিলনের ৩৫ বছর পর জার্মানি ভালো আছে বলে মত দিয়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা।

জরিপ অনুযায়ী, সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার ক্ষেত্রে পূর্ব ও পশ্চিম আরও ঘনিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। উভয় অংশের উৎপাদনশীলতা প্রায় সমান।

জার্মানির শীর্ষ রাজনৈতিক পদ-পদবিগুলোর ক্ষেত্রে পূর্ব ও পশ্চিমের মানুষের মধ্যে দ্বিমত আছে। পূর্ব জার্মানদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মনে করেন, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদগুলো উভয় অঞ্চলের লোকদের দিয়ে সমানভাবে পূরণ করা প্রয়োজন। অন্যদিকে পশ্চিমের মাত্র ৩২ শতাংশ মনে করেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

আরও পড়ুন

বর্তমানে জার্মান সরকারের মন্ত্রিসভার দিকে তাকালে দেখা যায়, একজন চ্যান্সেলর ও ১৭ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র দুজন পূর্ব জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেছেন।

সরকারব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে ভিন্ন মত। পশ্চিমের ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বর্তমানে প্রচালিত সরকারব্যবস্থা ঠিক আছে। আর পূর্বের ক্ষেত্রে এই হার ৭৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন