নিলামে ১২১ বছরের চকলেট
চকলেট খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই চকলেট কখনো কখনো প্রাচীন জিনিসপত্র সংগ্রাহকদের কাছেও মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। যেমনটি দেখা গেছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে ১২১ বছরের পুরোনো এক কৌটা চকলেট নিলামে তোলা হচ্ছে।
চকলেট নিলামে তোলার কারণ কী? শুধুই কি সেগুলো অনেক পুরোনো বলে? না; চকলেট ও কৌটাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে যুক্তরাজ্যের ইতিহাস। দেশটির রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড ও রানি আলেকজান্দ্রার সিংহাসনে অভিষেক উপলক্ষে বিশেষ ওই চকলেট তৈরি করা হয়েছিল।
সপ্তম এডওয়ার্ড ১৯০১ সালে যুক্তরাজ্যসহ ব্রিটেনের অধীনে থাকা উপনিবেশগুলোর রাজা হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ছিলেন রানি ভিক্টোরিয়ার বড় ছেলে। এডওয়ার্ডের আনুষ্ঠানিক অভিষেক হয় ১৯০২ সালের ২৬ জুন। ১৯১০ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি।
এডওয়ার্ডের অভিষেক উপলক্ষে ভ্যানিলা স্বাদের ওই চকলেট দেওয়া হয়েছিল মেরি অ্যান ব্ল্যাকমোর নামের এক স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীকে। ৯ বছর বয়সী ওই শিশুর বাড়ি ছিল উত্তর–পূর্ব ইংল্যান্ডের ডারহ্যাম এলাকায়। তবে ভ্যানিলা চকলেট না খেয়ে টিনের কৌটায় ভরে রেখে দিয়েছিল সে। মেরির মৃত্যুর পর সেগুলো তাঁর উত্তরসূরিদের সংরক্ষণে ছিল। তাঁরাও চকলেটগুলো ছুঁয়ে দেখেননি।
কৌটাসহ সেই চকলেটগুলো এখন রয়েছে মেরি অ্যান ব্ল্যাকমোরের নাতনি জেন থম্পসনের কাছে। তিনি সেগুলো যুক্তরাজ্যের ডারবি শহরে হ্যানসনস নামের একটি নিলামকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রির জন্য তুলতে চান। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মরভেন ফেয়ারলাই বলেন, ‘সে সময় (এডওয়ার্ডের অভিষেকের সময়) চকলেট ছিল সত্যিকারের একটি উপহার। কারণ, শিশুরা তখন একেবারেই চকলেট পেত না। চকলেটের কৌটাটি ওই শিশুর কাছে এতটাই বিশেষ একটি উপহার ছিল যে সেটি সে সেভাবেই রেখে দিয়েছিল।’
১২১ বছরের পুরোনো ওই চকলেটগুলো তৈরি করা হয়েছিল দক্ষিণ–পশ্চিম ইংল্যান্ডের বর্নভিল গ্রামে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি মাসের শেষের দিকে নিলামে উঠলে এসব চকলেটের দাম উঠতে পারে ১০০ থেকে ১৫০ পাউন্ড। মরভেন ফেয়ারলাই বলেন, যাঁরা রাজকীয় স্মৃতিচিহ্নগুলো সংগ্রহ করেন, তাঁরা চকলেটসহ কৌটাটি কিনতে পারেন।
স্বাভাবিকভাবেই পুরোনো চকলেটগুলোর মেয়াদ পেরিয়ে গেছে। তাই এখন সেগুলো খাওয়ার সাহস কেউ করবেন না বলে জানান মরভেন ফেয়ারলাই। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি কৌটাটি খোলেন, এটা থেকে চকলেটের মতো গন্ধ বের হবে। তবে আমি কৌটাটা খোলার ঝুঁকি নিতে পারব না।’