জার্মানিতে সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানচেষ্টা

সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানচেষ্টার অভিযোগে ত্রয়োদশ হেনরিক নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ
ছবি : রয়টার্স

জার্মানিতে সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে পুলিশ। সরকারকে উৎখাতের চেষ্টার অভিযোগ দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের ডানপন্থী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তারা পার্লামেন্ট ভবনের (রাইখস্ট্যাগ) নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা করছিল বলে পুলিশ অভিযোগ করছে।

পুলিশের ধারণা, ৭১ বছর বয়সী ত্রয়োদশ হেনরিক নামের এক ব্যক্তি এই আন্দোলনের মূল পরিকল্পনাকারী। ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে চরমপন্থী ‘রাইশব্যুর্গার আন্দোলনের’ সদস্যরাও রয়েছেন।

আইনজীবীরা বলছেন, অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে ১১টি রাজ্যে অভিযান চালানো হয়েছে। এসব রাজ্য থেকে হেনরিকসহ ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হেনরিক নিজেকে ‘যুবরাজ’ হিসেবে পরিচয় দেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলিরা বলেছেন, দেশটির ১১টি রাজ্য থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। চরমপন্থী রাইশব্যুর্গার মুভমেন্টের সদস্যরা আধুনিক জার্মান রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয় না। সহিংস হামলা ও বর্ণবিদ্বেষী তত্ত্বের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তারা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।

সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনার তথ্য পেয়ে দেশজুড়ে অভিযানে নামে পুলিশ। অন্তত তিন হাজার পুলিশ সদস্য দেশের ১৩০টি স্থানে অভিযান চালান। অভ্যুত্থানে জড়িত সন্দেহে অস্ট্রিয়া ও ইতালিতেও দুই জার্মান নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

অভ্যুত্থানচেষ্টার বিষয়ে জার্মানির বিচারমন্ত্রী মার্কো বুচম্যান এক টুইট বার্তায় বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় সশস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করছিল। সংগঠনটি ২০২১ সালের নভেম্বর থেকেই সশস্ত্র অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিল।

গত বছরের এপ্রিলে একটি অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন এই সংগঠনের কিছু সদস্য। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লতার্বাগকে অপহরণ করে তাঁরা নিজেদের ‘ইউনাইটেড প্যাট্রিয়টস’ বলে দাবি করেছিলেন। ওই ঘটনার পর জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সংগঠনটির আসল তৎপরতা সম্পর্কে আঁচ করতে পারে।

রুশসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

জার্মানির আইনজীবীরা বলেন, অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত সন্দেহে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে হেনরিক একজন রুশ প্রতিনিধির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে সেই রুশ প্রতিনিধি সাড়া দিয়েছিলেন কি না, এখনো তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অবশ্য ক্রেমলিন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, জার্মানির সরকার উৎখাতে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নই ওঠে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটা জার্মানির অভ্যন্তরীণ সমস্যা। রাশিয়ার হস্তক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই।