বৃহস্পতির চাঁদ পর্যবেক্ষণে গেল নভোযান

বৃহস্পতির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে জেইউআইসিই নামের একটি মিশন
ছবি: ইসার সৌজন্যে

বৃহস্পতি গ্রহ ও এর বরফঢাকা চাঁদের তথ্য সংগ্রহে জুপিটার আইস মুনস এক্সপ্লোরার (জেইউআইসিই) নামের একটি আট বছরের মিশন পরিচালনা করছে ইউরোপিয়ান মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ)। আজ শুক্রবার ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ গায়ানা অঞ্চল থেকে আরিয়ান ৫ রকেটে করে এই নভোযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁদের মিশন উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার এই মিশন পাঠানোর কথা ছিল, কিন্তু আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দেওয়া হয়। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে এই মিশন উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, বৃহস্পতির চাঁদে জীবিত ব্যাকটেরিয়ার দেখা পাওয়া যেতে পারে।

ইএসএর নেতৃত্বে জেইউআইসিই বৃহস্পতির তিন চাঁদ ইউরোপা, গিনিমিড ও ক্যালিস্টোর সমুদ্রে অভিযান চালাবে। এ চাঁদের পৃষ্ঠের নিচে বিশাল সমুদ্র থাকতে পারে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। পানির অস্তিত্ব থাকলে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

জেইউআইসিই প্রকল্পের বিজ্ঞানী নিকোলাস আলতোবেলি বলেন, ‘এই প্রথমবার আমরা মঙ্গল গ্রহ ও বৃহস্পতির মধ্যে বরফের রেখার বাইরে বসবাসের কোনো স্থান আছে কি না, তা অনুসন্ধান করতে যাচ্ছি। ওই বরফের রেখা অতিক্রম করলে তাপমাত্রা এতটাই কমে যায়, যেখানে পৃষ্ঠে তরল পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে না।’

এর আগে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণেও আরিয়ান ৫ রকেট ব্যবহার করা হয়েছিল।

নাসার তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর চেয়ে ৩১৮ গুণ বড় বৃহস্পতি গ্রহটি। একে ঘিরে ৮০ থেকে ৯৫টি চাঁদ প্রদক্ষিণ করছে। জেইউআইসিই মিশনটি বৃহস্পতির জটিল পৃষ্ঠ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং অক্সিজেন ও বরফযুক্ত নোনাজলের মহাসাগরের সঙ্গে এর চাঁদের সম্পর্ক অনুসন্ধান করবে। আমাদের সৌরজগৎ পর্যবেক্ষণে এখন পর্যন্ত যেসব নভোযান পাঠানো হয়েছে, তার মধ্য সবচেয়ে শক্তিশালী এটি। এতে ১০টি উন্নত যন্ত্র আছে। এর মধ্যে নয়টি ইসার ও একটি নাসার। ২০৩১ সালে এটি বৃহস্পতির কক্ষপথে পৌঁছাবে। সেখান থেকে তিনটি চাঁদের ওপর পর্যবেক্ষণ চালাবে।

এখন পর্যন্ত বৃহস্পতি গ্রহে সাতটি মিশন চালানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানে জুনো নামের একটি মিশন চলছে। এ বছরের শেষে ক্লিপান নামের আরেকটি মিশন চালু হবে।

জেইউআইসিই প্রকল্পের প্রধান ক্যারোল ল্যারিগোদেরি বলেন, বৃহস্পতির বরফাচ্ছাদিত চাঁদে কোনো ধরনের জীবিত ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।