কেক বানিয়ে জরিমানা

রুশ তরুণী আনাস্তাসিয়া চেরনিশেভার তৈরি সেই কেক
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

নীল-হলুদের কারুকাজ। ওপরে লেখা দুটি শব্দ। কেকটি বেশ নজরকাড়া। কিন্তু এই কেক তৈরি করে রাশিয়ার এক তরুণী বিপাকে পড়েছেন। আটক হতে হয়েছে তাঁকে। গুনতে হচ্ছে জরিমানা। ওই তরুণীর নাম আনাস্তাসিয়া চেরনিশেভা।

প্রশ্ন উঠতে পারে, কেক বানানোর জন্য কেন চেরনিশেভাকে জরিমানা করা হলো? আসলে তাঁর কেকের নীল-হলুদ রং মিলে যায় ইউক্রেনের পতাকার সঙ্গে। এর মধ্য দিয়ে নাকি রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ‘সুনামহানি’ করা হয়েছে। কেকের ওপর লেখা শব্দ দুটি নিয়েও আপত্তি রুশ আদালতের।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরু হয়। দেশের ভেতরে এই অভিযান নিয়ে যেকোনো সমালোচনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মস্কো। তবে দমানো যায়নি চেরনিশেভাকে। যুদ্ধের দ্বিতীয় মাস থেকেই নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে নীল-হলুদ ওই কেকের ছবি শেয়ার করে আসছেন তিনি।

সম্প্রতি চেরনিশেভাকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীর ‘সুনামহানি’ করার অভিযোগ আনা হয়। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান। সবশেষ গত শুক্রবার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চেরনিশেভাকে ৩৫ হাজার রুবল (৪৫ হাজার টাকার বেশি) জরিমানা করেন মস্কোর একটি আদালত। এ ছাড়া আদালত এ–ও বলেছেন, একই কাজ আবার করলে তাঁকে পাঠানো হবে কারাগারে।

এদিকে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো নিয়ে মোটেও হতবাক নন চেরনিশেভা। সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলও করবেন না তিনি। চেরনিশেভা বলেন, ‘রুশপন্থীরা ঝড়ের গতিতে মন্তব্য করে বলছিলেন, আমার জায়গা হওয়া

উচিত কারাগারে। প্রথমে আমি হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। পরে একসময় ভাবলাম, এই কেকের জন্য তারা আমাকে ধরতে আসবে। আর তখন আমি পরিস্থিতি বুঝে কাজ করব। শেষ পর্যন্ত তারা এল।’

চেরনিশেভা কেক তৈরি করে বিক্রি করেন। নিজের তৈরি অনেক কেক নিলামে তুলেছেন তিনি। এসব কেক বিক্রির অর্থ জনসেবার কাজে লাগান। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক বিরোধী ইয়েভজেনি রোজিম্যানকে কেক বিক্রির অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন তিনি।