যুক্তরাজ্যের আরও সহায়তা পাচ্ছে কিয়েভ

ঋষি সুনাক ও ভলোদিমির জেলেনস্কি
ছবি : রয়টার্স

যুক্তরাজ্য সফরে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল বুধবার তাঁর যুক্তরাজ্য সফরে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছেন। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের যুদ্ধবিমান চালকদের উন্নত ন্যাটো যুদ্ধবিমান চালানোর প্রশিক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। একে পশ্চিমা সামরিক সহায়তা বৃদ্ধির বড় ধরনের প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে এটা জেলেনস্কির দ্বিতীয় বিদেশ সফর। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এক কূটনীতিক বলেন, আজ বৃহস্পতিবার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি ব্রাসেলসে যোগ দিতে পারেন।

যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের সাহায্যে যারা শুরুতেই এগিয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য। আজ আমি লন্ডনে এসেছি ব্যক্তিগতভাবে ব্রিটিশ জনগণকে ও প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে তাঁদের সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ জানাতে।’ তিনি ঋষি সুনাকের সঙ্গে তাঁর একটি ছবিও পোস্ট করেছেন।

যুক্তরাজ্যে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে জেলেনস্কির। এ ছাড়া দেশটির পার্লামেন্টে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা। তিনি যুক্তরাজ্যে যেখানে ইউক্রেন সেনারা প্রশিক্ষণ নেবেন, সেখানেও যাবেন।

জেলেনস্কির সফর নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির যুক্তরাজ্য সফর দেশটির জনগণের সাহস, সংকল্প এবং লড়াইয়ের পাশাপাশি আমাদের দুই দেশের মধ্যে অটুট বন্ধুত্বের প্রমাণ।’

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি কিয়েভকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ ত্বরান্বিত করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীকে যুক্তরাজ্যের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণের ফলে দেশটির বিমানচালকেরা ন্যাটোর যুদ্ধজাহাজ চালাতে পারবেন।

এর আগে গত মাসে যুক্তরাজ্য প্রথম দেশ হিসেবে কিয়েভে ট্যাংক সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে ১৪টি ট্যাংক দেওয়ার কথা বলা হলেও তাদের দেখাদেখি যুক্তরাষ্ট্র ও কিয়েভের অন্য মিত্ররা বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে ট্যাংক সরবরাহে সম্মত হয়। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেন, কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি পৃথক পৃথক দেশ হিসেবে ঘোষণা না দিয়ে একত্রে ঘোষণা দিলে ভালো হয়।

আরও হামলার প্রস্তুতি

পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতির মধ্যেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অনেকটাই এগিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভ বলছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আরও হামলার আশঙ্কা করছে তারা। এ অবস্থায় ইউক্রেনের জনগণকে দেখানোর জন্য তাদের বড় কিছু করতে হবে। ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান ওলেস্কি দানিলোভ বলেন, এ‘খন দোনেৎস্কে মনোযোগ দেওয়া রুশ সেনারা খারকিভে নতুন করে আক্রমণ শুরু করতে পারেন। তাঁরা কতটা সফল হবেন, তা নির্ভর করছে আমাদের ওপর।’

এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পশ্চিমা অস্ত্র শুধু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করবে। ইউক্রেনের দাবি, পশ্চিমা মিত্ররা রুশ সেনাদের তাড়ানোর মতো অস্ত্র দিলেই কেবল যুদ্ধ শেষ হতে পারে। এ অবস্থায় যুদ্ধবিমান চাইছে কিয়েভ। গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠাবে না। যুক্তরাজ্য জানায়, তাদের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করতে প্রশিক্ষণ দরকার হবে। পশ্চিমা মিত্ররা একত্রে সিদ্ধান্ত নিলে যুদ্ধবিমান পাঠানোর দরজা খোলা রেখেছে ফ্রান্স ও পোল্যান্ড।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন