পদত্যাগের চার দিন পর আবার লেকর্নু ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী

সেবাস্তিয়ান লেকর্নু

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর চার দিন পর আবার একই পদে ফিরছেন সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ গত শুক্রবার আবার লেকর্নুকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। মাখোঁর মিত্র ও বিরোধী—উভয় পক্ষই আশা করেছিল, কৃচ্ছ্রসাধনমূলক বাজেট নিয়ে চলা কয়েক মাসের অচলাবস্থা কাটাতে সরকারে নতুন কোনো মুখ আসবে। কিন্তু মাখোঁ আবার ঘুরেফিরে ৩৯ বছর বয়সী লেকর্নুকেই নিয়োগ দিলেন।

প্রেসিডেন্ট ভবন এলিসি প্রাসাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন এবং তাঁকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন।

গত বছর মাখোঁ ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করার আশায় আকস্মিক নির্বাচন দেন, কিন্তু ফল হয় উল্টো। ফ্রান্স তখন থেকেই রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পড়ে আছে। নির্বাচনে ডানপন্থীদের আসন বেড়ে যাওয়ায় ঝুলন্ত সংসদ সৃষ্টি হয়েছে।

এলিসি প্রাসাদের ঘোষণার পর লেকর্নু এক্স–এ লেখেন, তিনি দায়িত্ব বোধ থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটাতে হবে।’

লেকর্নু বছরের শেষ নাগাদ ফ্রান্সের বাজেট প্রণয়ন করতে যা কিছু সম্ভব, সবই করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি অর্থব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অগ্রাধিকার।’

২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ সংকটে পড়া মাখোঁ

নতুন করে লেকর্নুকে প্রধানমন্ত্রী করা নিয়ে কিছু বলেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

ফ্রান্সের অতি-ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি দলের নেতা জর্দান বারদেলা এ সিদ্ধান্তকে ‘বাজে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, নতুন মন্ত্রিসভাকে অবিলম্বে অনাস্থা ভোটের মুখে ফেলবেন। অতি-বামপন্থীদের এক মুখপাত্র বলেছেন, লেকর্নুর প্রত্যাবর্তন ফরাসি জনগণের প্রতি এক বিশাল অবজ্ঞা। সংসদের মধ্যমপন্থী দল সোশ্যালিস্ট পার্টি বলেছে, তাদের সঙ্গে লেকর্নুর কোনো সমঝোতা হয়নি।

খরচ কমানোর পদক্ষেপ নিয়ে অচলাবস্থার কারণে ফরাসি সংসদ ইতিমধ্যেই লেকর্নুর দুই পূর্বসূরিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। মাখোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী লেকর্নু পূর্বে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। পদত্যাগের পর তিনি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য অতিরিক্ত দুই দিন দায়িত্বে থেকে যাওয়ার সম্মতি জানান। গত বুধবার রাতে ফরাসি এক টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে লেকর্নু বলেন, ২০২৬ সালের সংশোধিত বাজেটের খসড়া সোমবারের মধ্যেই উপস্থাপন করা যেতে পারে, যা বছরের শেষ নাগাদ অনুমোদনের নির্ধারিত সময়সীমা পূরণ করবে।