পশ্চিমা ঐক্যে ফাটল ধরাতে জার্মানির অডিও ফাঁস করেছে রাশিয়া: দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

মস্কোয় ফেডারেল অ্যাসেম্বলিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনফাইল ছবি: রয়টার্স

জার্মানির বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের কথোপকথনের অডিও ফাঁস করে মস্কো পশ্চিমা জগতে বিভাজন ঘটাতে চাইছে বলে ওয়াশিংটন মনে করছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ আবার ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিরোধিতা করেছেন।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, মস্কো পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্যে বিভাজন ঘটাতে সাহসী ও স্বচ্ছ এই চেষ্টা চালিয়েছে। তা ছাড়া ইউক্রেনের জন্য সহায়তার ক্ষেত্রে জার্মান সরকারের মধ্যেই ঐক্যের অভাব রয়েছে বলে মস্কো প্রমাণ করতে চাইছে।

কিরবি আরও বলেন, একাধিক দেশ নিজেদের সাধ্যমতো ইউক্রেনকে সহায়তা করছে। তিনি জার্মানির সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। এর আগে জার্মানি রাশিয়ার এই আচরণকে ‘তথ্যযুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ আরেকবার ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ না করার ব্যাপারে নিজের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। সেই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু স্থির করতে প্রোগ্রামিংয়ের জন্য জার্মান সৈন্যদের সহায়তার প্রয়োজন হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।

শলৎজ বলেন, চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি এভাবে জার্মানিকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে দিতে পারেন না।

ইউক্রেনকে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স নিজস্ব সৈন্যদের প্রোগ্রামিংয়ে কাজে লাগাচ্ছে বলেও শলৎজ আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ফলে বিষয়টি কেন্দ্র করে ইউরোপের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

বিরোধীপক্ষ ও অনেক বিশেষজ্ঞের দাবি, শলৎজের এমন সব দাবি পুরোপুরি সত্য নয়। উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইউক্রেনীয় সেনারাই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে সক্ষম। তবে সে ক্ষেত্রে এমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করতে আরও সময় লাগবে বলে তাঁরা মনে করছেন।

শলৎজের বক্তব্য সত্ত্বেও রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে জার্মানির সক্রিয় ভূমিকার অভিযোগ করছে। জার্মান রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ বিষয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে বলে ক্রেমলিনের নেতারা অভিযোগ করছেন। অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সংযোগকারী সেতু ধ্বংস করতে জার্মানি ইউক্রেনকে সহায়তা করতে চাইছে, রুশ নেতাদের মন্তব্যে এমন অভিযোগও উঠে এসেছে। জার্মানি তথা পশ্চিমা বিশ্বের ওপর পাল্টা হামলারও হুমকি দিচ্ছেন তাঁরা।

পুরো ঘটনাকে কেন্দ্র করে জার্মানির রাজনীতিতে জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সম্ভবত আগামী সোমবারই সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে প্রতিরক্ষাবিষয়ক কমিটি জরুরি বৈঠকে বসছে। সেখানে চ্যান্সেলর শলৎজও বক্তব্য দেবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

রাজনৈতিক নেতারা আশা করছেন, ওই বৈঠকের আগে সেনাবাহিনীর তথ্যফাঁস সম্পর্কে তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হবে। ভবিষ্যতে জার্মান সেনাবাহিনীর যোগাযোগ আরও সুরক্ষিত করার বিষয়েও অগ্রগতির আশা জাগছে।