ব্রাসেলসের সেই ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় ৮ জনকে কারাদণ্ড

বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাসেলসের জাভেন্তেম বিমানবন্দরেরর একাংশ
রয়টার্স ফাইল ছবি

বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ২০১৬ সালের বোমা হামলার ঘটনায় আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। এর মধ্য দিয়ে দেশটির এ এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় অপরাধের ঘটনার বিচারকাজ শেষ হলো।

২০১৬ সালের ২২ মার্চ ব্রাসেলসের প্রধান বিমানবন্দর ও মেট্রোস্টেশনে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩২ জন নিহত হন, পরে আহত আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়। জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট) তখন এ হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

এ ঘটনায় করা মামলায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার দায়ে গত জুলাইয়ে ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ফরাসি নাগরিক সালাহ আবদেসলাম ও মরক্কোকান বংশোদ্ভূত বেলজিয়ামের মোহামেদ আবরিনি। ২০১৫ সালে প্যারিসে হামলার ঘটনায় আগেই তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

ব্রাসেলসে যে আত্মঘাতী দলটি বোমা হামলা চালিয়েছে, তার সদস্য ছিলেন আবরিনি। তাঁরও আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে তিনি আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। আবরিনিকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

প্যারিস হামলার ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি একটি বন্দুক হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালে আবদেসলামকে বেলজিয়ামের আদালতে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সাজাকে যথেষ্ট মনে করেছেন আদালত। এ জন্য ব্রাসেলসের ঘটনায় তাঁকে অতিরিক্ত মেয়াদে সাজা ভোগ করতে হবে না।

ব্রাসেলস বিমানবন্দরের সিসিটিভি ক্যামেরায় হামলার দিন ধারণ করা ভিডিওতে মোহামেদ আবরিনিসহ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দেখা গেছে। আবরিনিকে হ্যাট পরা অবস্থায় দেখা গেছে।

আবরিনির মতো সিরিয়ান বংশোদ্ভূত ওসামা ক্রায়েমও শেষ মুহূর্তে আত্মঘাতী হামলার সিদ্ধান্ত বদল করেছিলেন। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিলাল এল মাখোউখি ও ওসামা আতার নামের আরও দুই দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ওসামা আতার আইএসের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ছিলেন। তিনি জিহাদি সেলের নেতৃত্ব দিতেন। আতারের অনুপস্থিতিতেই তাঁর বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলেছে। ধারণা করা হয়, তিনি ২০১৭ সালে সিরিয়ায় মারা গেছেন।

এ ছাড়া বায়িঙ্গানা মুহিরওয়া নামের একজনকে সন্ত্রাসী সংগঠনের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই অভিযোগে তিউনিসিয়ার নাগরিক সোফিয়েন আয়ারিকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে আগের কিছু মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজাকে যথেষ্ট মনে করেছেন আদালত। এ কারণে ব্রাসেলসের ঘটনায় তাঁকে অতিরিক্ত মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে না।
দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের কারও বেলজিয়ামের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না বলেও আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন