প্রিন্স অ্যান্ড্রুর আত্মজীবনী: চাচার নাক ফাটিয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি

প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেলফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের ছেলে প্রিন্স হ্যারি রাজপরিবারের এক অনুষ্ঠানে হাতাহাতিতে জড়িয়েছিলেন। তা-ও আবার নিজের চাচা প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে। হাতাহাতির সময় চাচার নাক ফাটিয়েছিলেন তিনি। প্রিন্স অ্যান্ড্রুর আত্মজীবনীর বরাতে সংবাদমাধ্যমে এমন খবর বেরিয়েছে। তবে এ তথ্য একেবারেই সত্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর আত্মজীবনীর শিরোনাম এনটাইটেলড: দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অব হাউস অব ইয়র্ক। আত্মজীবনীটি লিখেছেন ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু লউনি। সেটি এখনো প্রকাশিত হয়নি। তারই একটি অংশ গত শনিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল–এ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই ২০১৩ সালে পারিবারিক অনুষ্ঠানে হাতাহাতির ওই ঘটনা উঠে আসে।

ডেইলি মেইল–এর খবরে বলা হয়, প্রিন্স হ্যারিকে নিয়ে তাঁর আড়ালে কিছু বলেছিলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। পরে ওই অনুষ্ঠানে চাচাকে ‘কাপুরুষ’ বলে সম্বোধন করেন হ্যারি। কারণ, সামনাসামনি ওই কথা বলার সাহস হয়নি অ্যান্ড্রুর। এরপরই দুজনের মধ্যে বিতণ্ডা শুরু হয়। গড়ায় হাতাহাতিতে। একপর্যায়ে চাচার নাক ফাটিয়ে দেন হ্যারি। এই রক্তারক্তির পরই শেষ হয় লড়াই।

প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল। প্রকাশিত আত্মজীবনীর খণ্ডাংশ অনুযায়ী, মেগানের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্ক নিয়েও সমালোচনা করেছিলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। হ্যারিকে তিনি বলেছিলেন, মেগানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে এক মাসও টিকবে না। মেগান ‘সুযোগসন্ধানী’ এবং হ্যারির তুলনায় খুব বেশি বয়সী বলেও উল্লেখ করেন অ্যান্ড্রু। তাঁর মতে, মেগানকে বিয়ে করে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করতে যাচ্ছেন হ্যারি।

ডেইলি মেইল–এ প্রকাশিত ওই খবরের সত্যতা অবশ্য নাকচ করে দিয়েছেন ডিউক অব সাসেক্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান। তাঁদের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি যে প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স অ্যান্ড্রু কখনো হাতাহাতিতে জড়াননি। এ ছাড়া ডাচেস অব সাসেক্সকে (মেগান) নিয়ে হ্যারির কাছে তিনি যে মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও করেননি প্রিন্স অ্যান্ড্রু।’

আত্মজীবনীর খণ্ডাংশের বরাতে খবর প্রকাশের জন্য ডেইলি মেইলকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন হ্যারি ও মেগান। তাঁদের মুখপাত্রের ভাষ্যমতে, এই সংবাদে ‘ভুল, ক্ষতিকর ও মানহানিকর’ বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরও পরিষ্কারভাবে জানতে বাকিংহাম প্যালেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দ্য গার্ডিয়ান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

প্রিন্স অ্যান্ড্রু
ফাইল ছবি: রয়টার্স

২০১৯ সালে বিবিসির নিউজনাইট অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার ঘিরে চরম বিতর্কের মুখে পড়েন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত নারী নিপীড়নকারী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন ডিউক অব ইয়র্ক অ্যান্ড্রু। এর জেরে ২০২১ সালে তাঁর রাজকীয় ও সামরিক খেতাব কেড়ে নেওয়া হয়।

খেতাব হারানো ভাই অ্যান্ড্রুকে একটি রাজকীয় বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন রাজা চার্লস। প্রাসাদসম ৩০ কক্ষের বাড়িটি উইন্ডসর গ্রেট পার্কে অবস্থিত। বাড়ির মালিকানায় রয়েছে রাজপরিবার। তবে গত বছর থেকে অ্যান্ড্রুর ভাতা দেওয়া বন্ধ করেছেন রাজা। এর পরিমাণ ছিল বছরে আনুমানিক ১০ লাখ পাউন্ড।

পরিবারের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্কও ঘনিষ্ঠ নয়। রাজকীয় জীবনের সমালোচনা করে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন তিনি। পরে কানাডায় পাড়ি জমান। সেখান থেকে ২০২০ সালে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। তবে চলতি বছরের শুরুতে বিবিসিকে হ্যারি বলেন, পরিবারকে ক্ষমা করেছেন তিনি। পরিবারের মানুষগুলোর সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারলে ভালো লাগবে তাঁর।