ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হতে চান ভাগনারপ্রধান

বাখমুতে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভাগনার গ্রুপ। ভাড়াটে এই সেনা দলের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে চান রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪ সালে ইউক্রনের প্রেসিডেন্ট পদে যে নির্বাচন হবে, তাতে তিনি অংশগ্রহণ করবেন।

বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে প্রিগোশিন বলেন, ‘আমি রাজনীতির মাঠে নামছি। আমার আশপাশের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আমি ২০২৪ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।

প্রিগোশিন বলেন, তিনি আশা করছেন, ইউক্রেনের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট পেট্রো প্রোশেঙ্কো এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পরবেন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করি, তাহলে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে, শান্তি ফিরবে। কোনো গোলাবারুদ খরচের প্রয়োজন পড়বে না।’

ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনাদের পাশাপাশি লড়াই করছে ভাগনার গ্রুপ। প্রিগোশিনের পক্ষ থেকে রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছ থেকে ঠিকমতো সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ না পেলে নিজে কেন কিনে নিচ্ছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিগোশিন বলেন, ‘যদি নিজের অর্থেই অস্ত্র কিনে যুদ্ধ করেন, তাহলে সেটি হবে একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার বিষয়। সেটি ব্যবসা হবে না।’

প্রিগোশিনের মতে, ভাগনার গ্রুপের প্রতি মাসে ১০ হাজার টন গোলাবারুদ প্রয়োজন, যার মূল্য ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। যুদ্ধে সেনা মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধে যেকোনো অবস্থায়ই যোদ্ধারা মারা যেতে পারেন। যুদ্ধ এমন একটি ঘটনা, যেখানে এক বাহিনী আরেক বাহিনীকে হত্যা করে।

তবে প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে তাঁর বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে যাবে, এমন কথাও চাউর হয়েছে। এ ধরনের কোনো সম্পর্ক তৈরির কথা বা অর্থ নেওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। প্রিগোশিন বলেন, ‘আমি কোথাও যাচ্ছি না।’ রুশ সামরিক বাহিনীর প্রধানকে ইঙ্গিত করে ভাগনারপ্রধান বলেন, ‘খেরসন, খারকিভসহ অন্য অঞ্চল দখলের পর আমরা যখন তা শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ছেড়ে দিয়েছি, এখন অর্থ নেওয়ার প্রশ্ন আসছে কেন?’

ভাগনারপ্রধান পৃথক আরেক বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়ার ২৪টি শহরে সেনা নিয়োগের জন্য কেন্দ্র খুলেছে ভাগনার গ্রুপ। তিনি বলেন, ‘এখন নতুন যোদ্ধারা আসছেন, যাঁরা তাঁদের দেশ ও পরিবারকে রক্ষা করতে আমাদের পাশে থাকবেন। আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যৎ ঠিক করতে এবং অতীতের স্মৃতি রক্ষা করতে তাঁরা লড়াই করবেন। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধ সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে যাব। আমরা সব বাধা কাটিয়ে উঠব।’

প্রিগোশিনের সঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। ভাগনার গ্রুপের প্রধান বেশ কয়েকবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ ছাড়া ভাগনারের সফলতায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিংসা নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভাগনার গ্রুপের সফলতার পথে বাধা সৃষ্টি করছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে গোলাবারুদ সরবরাহে অনীহার মতো বিষয়ও।

আরও পড়ুন