যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে আবেদন দুই দশকে সর্বোচ্চ

বিপুলসংখ্যক মানুষ অবৈধভাবে ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে যান
ছবি: এএফপি

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের আবেদনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দেশটির পরিসংখ্যান দপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে প্রায় ৭৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এসব আবেদনের মাধ্যমে ৯০ হাজার মানুষ আশ্রয় চেয়েছেন, যা ২০০২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।

যুক্তরাজ্যে বার্ষিক আশ্রয় চেয়ে আবেদনের হিসাব দিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘গত বছর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে ৭৪ হাজার ৭৫১টি আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদনের মাধ্যমে ৮৯ হাজার ৩৯৮ জন আশ্রয় চেয়েছেন। ২০১৯ সালে যতগুলো আবেদন জমা পড়েছিল, এই সংখ্যা তার দ্বিগুণ।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘২০২২ সালে নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে আসা মানুষের আশ্রয় আবেদন বেড়েছে। গত বছর নৌকায় করে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ৯০ শতাংশ (৪০,৩০২) আশ্রয়ের আবেদন করেছে। এই সংখ্যা মোট আবেদনকারীদের ৪৫ শতাংশ। ২০২২ সালে যেসব আবেদন জমা পড়েছিল, এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে এসে পৌঁছায়।’

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে করা আবেদনের সংখ্যায় ইরানকে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছে আলবেনিয়া। গত বছর আশ্রয় চেয়ে আলবেনিয়ার নাগরিকেরা সবচেয়ে বেশি আবেদন করেন। গত বছর আলবেনিয়ার ১৪ হাজার ২২৩ জন আশ্রয় আবেদন করেন। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৭৩ জন ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে যান।

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে গত বছর যে ১০ দেশ থেকে আবেদন পড়েছে সবচেয়ে বেশি, সেগুলোর মধ্যে আলবেনিয়া বাদে বাকি সব এশিয়ার। আশ্রয় চেয়ে করা আবেদনের ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০টি দেশ হচ্ছে, (আদ্যাক্ষরের ক্রমানুসারে) আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, বাংলাদেশ, ইরিত্রিয়া, সুদান, ভারত ও পাকিস্তান।

এসব আবেদনের মধ্যে ১৮ হাজার ৬৯৯টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগের বছরের তুলনায় গত বছর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সংখ্যা ২৯ শতাংশ বেড়েছে। তবে তা ২০১৯ সালের তুলনায় ১০ শতাংশ কম।

গত বছর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে আবেদনের সংখ্যা বাড়লেও সেই সংখ্যা ফ্রান্স ও জার্মানির চেয়ে অনেক কম বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালে জার্মানিতে আশ্রয় চেয়ে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৫৫টি আবেদন জমা পড়ে। এরপর যথাক্রমে ফ্রান্সে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭০৫ ও স্পেনে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে।