রাশিয়ায় ঢুকে সেনাদের সঙ্গে লড়াই করার দাবি তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর

ড্রোন হামলায় রাশিয়ার বেলগোরোদ শহরের সিটি হল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১২ মার্চছবি: এএফপি

ইউক্রেনভিত্তিক রাশিয়ার তিনটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে পড়েছে এবং সেখানে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে দাবি করেছে তারা।

দ্য ফ্রিডম অব রাশিয়া লিজিয়ন (এফআরএল) এবং সাইবেরিয়ান ব্যাটালিয়ন (এসবি) নামে দুটি গ্রুপ ভিডিও পোস্ট করেছে। সেখানে যেসব স্থান দেখা যাচ্ছে, সেগুলোকে রাশিয়ার বেলগোরোদ ও কুরস্ক অঞ্চল বলেও দাবি করেছে তারা।

এফআরএল দাবি করে, কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্তবর্তী তেতকিনো গ্রামটি এখন তাদের দখলে। আর ইউক্রেনভিত্তিক রাশিয়ার বিরোধী রাজনীতিবিদ ইলিয়া পোনোমারেভ দাবি করেন, বেলগোরোদ অঞ্চলে সীমান্তবর্তী লোজোভায়া রুদকা গ্রামটি ‘মুক্তিবাহিনীর’ পুরোপুরি দখলে। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছ, বিদ্রোহীদের এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে আজ সীমান্ত অতিক্রম করে এই তিন গোষ্ঠীর পরিচালিত অভিযানে নিজেদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। দেশটির সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর মুখপাত্র আন্দ্রে ইউসোভ বলেছেন, ওই গোষ্ঠীগুলো আসলে রাশিয়ার নাগরিকদের দ্বারা গঠিত স্বাধীন সংস্থা। তারা ‘নিজ ঘরেই’ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

আজ এলআরএলের পোস্ট করা ভিডিওতে দাবি করা হয়, ভিডিওটি রাশিয়া-ইউক্রেনের সীমান্ত এলাকার। ফুটেজে এফআরএলের একজন সশস্ত্র সেনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের সব নাগরিকের মতো আমরা পুতিনের স্বৈরশাসন থেকে রাশিয়াকে মুক্ত করার স্বপ্ন দেখি। আমরা শুধু স্বপ্ন দেখি না, এই স্বপ্নগুলোকে সত্যি করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা আমাদের ভূমির প্রতিটি সেন্টিমিটার এই শাসকের হাত থেকে মুক্ত করব।’

আরেকটি ভিডিওতে এসবি বলেছে, রাশিয়ান ফেডারেশনের ভূখণ্ডে তীব্র লড়াই চলছে। বলা হচ্ছে, ওই ফুটেজে তারা যাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাঁরা রাশিয়ার সরকারি বাহিনীর সদস্য। এসবির যোদ্ধারা আসন্ন ১৫ থেকে ১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেরও নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ‘এই ব্যালট ও ভোটকেন্দ্রগুলো কাল্পনিক। আপনি সত্যিই আপনার জীবনমান উন্নয়নের জন্য পরিবর্তন চাইলে, তা সম্ভব শুধু আপনার হাতের অস্ত্র দিয়ে।’

ইউক্রেনভিত্তিক রাশিয়ান আরেকটি গ্রুপ রাশিয়ান ভলান্টিয়ার কর্পসও (আরডিকে) একটি ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ার সরকারি বাহিনী যুদ্ধ না করেই অস্ত্র ফেলে পালিয়েছে।

তবে এসব ভিডিওর সত্যতা বিবিসি নিজেরা যাচাই করতে পারেনি।

অন্যদিকে পৃথক আরেক ঘটনায় রাশিয়া বলেছে, দেশটির বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ২৫টি ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেন। এ হামলাও ব্যর্থ হয়েছে। তবে কয়েকটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, রাশিয়ার বেশ কয়েকটি তেল কারখানায় আগুন জ্বলছে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়, মস্কোর ঠিক পূর্বে রাশিয়ার ইভানোভো অঞ্চলে একটি সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজ আটজন ক্রু ও সাতজন যাত্রী নিয়ে ওড়ার কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি ইঞ্জিনে আগুন ধরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

ভিডিওতে দেখা যায়, আগুন লাগা অবস্থায় উড়োজাহাজটি আকাশে ঘুরপাক খাচ্ছে এবং পরে দুর্ঘটনাস্থলে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়।