প্রথম দিনেই হ্যারির আত্মজীবনী রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি
প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনী স্পেয়ার–এর ইংরেজি সংস্করণ এক দিনে ১৪ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বইটির প্রকাশক পেঙ্গুইন র্যান্ডম হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় বইটি বিক্রি শুরুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১৪ লাখ কপি বিক্রি হয়। এটি একটি রেকর্ড। কল্পকাহিনীর বাইরে তাদের প্রকাশিত কোনো বই এর আগে প্রথম দিনে এত কপি বিক্রি হয়নি।
নানা আলোচনা-সমালোচনার পর গত মঙ্গলবার বাজারে আসে স্পেয়ার বইটি। এটি প্রকাশের আগে প্রচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রিন্স হ্যারির চারটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। আত্মজীবনী প্রকাশের পর প্রথমবারের মতো হ্যারির জনপ্রিয়তা নিয়ে করা এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা ক্রমাগত কমছে। বইটি বিশ্বে ১৬টি ভাষায় ও অডিও বুক আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
আত্মজীবনীতে প্রিন্স হ্যারি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ও রাজপরিবারের নানা অজানা তথ্য তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বড় ভাইয়ের হাতে মার খাওয়ার মতো ঘটনাও। প্রিন্স হ্যারি বইতে লিখেছেন, ২০১৯ সালে বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম তাঁর গায়ে হাত তুলেছিলেন। এ ছাড়া ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বাবার কাছে বর্তমান কুইন কনসর্ট ক্যামিলাকে বিয়ে না করার অনুরোধ করেছিলেন বলেও বইয়ে উল্লেখ করেছেন।
৩৮ বছর বয়সী প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, আফগানিস্তানে তিনি যখন যুদ্ধে এসেছিলেন, তখন ২৫ তালেবান সদস্যকে তিনি হত্যা করেছিলেন। তাঁর এই তথ্য প্রকাশের পর তালেবান ও যুক্তরাজ্যের সাবেক সেনা কর্মকর্তারা নিন্দা জানিয়েছেন।
বইটি বাজারে আসার আগেই এর স্প্যানিশ ভাষার সংস্করণ ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তারপরও বইটি নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছে। বইটি বিক্রি প্রসঙ্গে র্যান্ডম হাউস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও প্রকাশক গিনা সেন্ট্রেলো বলেন, ‘স্পেয়ার বইটি একজন তারকার আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু। বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে দুর্বল ও আন্তরিক, সাহসী এবং অন্তরঙ্গ বিষয়। স্পেয়ার এমন একজনের গল্প, যাঁর সম্পর্কে আমরা অনেক জানি বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন আমরা প্রিন্স হ্যারিকে তাঁর নিজের কথার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জানতে পারছি।’
প্রকাশক গিনা আরও বলেন, ‘প্রথম দিনের ব্যাপক বিক্রির বিষয়টি দেখে আমরা বলতে পারি, স্পেয়ার বইটি পড়ার দাবি রাখে, এ বিষয়ে পাঠকেরা সম্মত হবেন। বইটি প্রকাশ করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
এদিকে জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইউগভের করা এক জরিপের তথ্য তুলে ধরেছে দ্য টাইমস। সেখানে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ মানুষ প্রিন্স হ্যারি সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। এক দশক আগে তাঁর সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন ৮০ শতাংশ মানুষ। প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগানের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি কমেছে ৬৫–উর্ধ্ব মানুষের মধ্যে।
রাজপরিবারের নানা বিষয় সামনে এনে অর্থ আয় করতে প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী আকর্ষণীয় যেসব চুক্তি করেছেন, স্পেয়ার বইটি প্রকাশ তার মধ্যে অন্যতম। ২০২০ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবার ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করছেন এ দম্পতি। নতুন বই স্পেয়ার নিয়ে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।