তুরস্ক থেকে ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারকে নিয়ে দেশে ফিরলেন জেলেনস্কি

ইউক্রেনের মারিউপোল সেনাশিবিরে কর্মরত ছিলেন এই কমান্ডারেরা
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারকে তুরস্ক থেকে দেশে নিয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

গতকাল শনিবার ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ৫০০তম দিন। ঠিক এদিনই জেলেনস্কি তুরস্ক থেকে ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারকে নিয়ে দেশে ফেরেন।

ইউক্রেনের মারিউপোল সেনাশিবিরে (গ্যারিসন) কর্মরত ছিলেন সাবেক এ কমান্ডাররা। আত্মসমর্পণের পর বন্দী হিসেবে তাঁদের তুরস্কে পাঠানো হয়েছিল।

ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারকে দেশে ফিরিয়ে আনার ঘটনাটিকে কিয়েভের জন্য একটি বড় ধরনের প্রতীকী অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারের মুক্তির নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনা গত বছর হওয়া বন্দীবিনিময় চুক্তির লঙ্ঘন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, বন্দীবিনিময় চুক্তির আওতায় এসব ব্যক্তিকে তুরস্কে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আঙ্কারা।

ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি মস্কোকে জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে রাশিয়া।

গত বছর মারিউপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় থেকে তিন মাসের তুমুল প্রতিরোধ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এসব কমান্ডার। এর জেরে তাঁরা ইউক্রেনে বীর হিসেবে পরিচিতি পান।

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিকে মারিউপোলে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। সেখানে রুশ হামলায় হাজারো বেসামরিক লোক নিহত হন।

একপর্যায়ে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ যোদ্ধারা মারিউপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানার নিচের টানেল ও বাংকারে আটকা পড়েন। শেষ পর্যন্ত গত বছরের মে মাসে তাঁদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় কিয়েভ।

আঙ্কারার মধ্যস্থতায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে এখানকার কিছু বন্দীকে বিনিময় করে মস্কো। তবে চুক্তিতে শর্ত ছিল, যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনীয় এসব কমান্ডারকে তুরস্কেই থাকতে হবে। কিন্তু এখন তাঁরা ছাড়া পেয়ে গেলেন।

গত শুক্রবার ইস্তাম্বুলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলেনস্কি। পরে তিনি বলেন, ‘আমরা তুরস্ক থেকে দেশে ফিরছি। আমাদের নায়কদের দেশে নিয়ে আসছি।’

রাশিয়ার আরআইএ বার্তা সংস্থাকে পেসকভ বলেন, ইউক্রেনীয় সাবেক কমান্ডারদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কেউ মস্কোকে অবহিত করেনি। চুক্তি অনুসারে, এসব কমান্ডারকে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুরস্কে থাকার কথা ছিল।

আগামী সপ্তাহে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন আছে। এই সম্মেলনের আগে ন্যাটো মিত্রদের ব্যাপক চাপের কারণে ইউক্রেনের সাবেক পাঁচ কমান্ডারকে তুরস্ক মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে বলে মন্তব্য করেন পেসকভ। ন্যাটোর আসন্ন সম্মেলনে ভবিষ্যতে জোটের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে একটা ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়ার আশা করছে ইউক্রেন।

ইউক্রেনের সাবেক কমান্ডারদের এখনই কেন দেশে ফিরতে দেওয়া হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি জেলেনস্কি। এ বিষয়ে তুরস্কের যোগাযোগ অধিদপ্তরের মন্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স, কিন্তু তারা এই অনুরোধে সাড়া দেয়নি।