ইরানের ‘কামিকাজে’ ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা

গত সেপ্টেম্বর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধে এই ড্রোনের ব্যবহার শুরু করে রাশিয়া
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে আজ সোমবার বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে রাজধানী কিয়েভে ইরানের তৈরি কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে। কিয়েভ ছাড়াও দেশটির আরও দুটি অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এতে দেশটির শত শত গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিগাল এসব তথ্য জানিয়েছেন। আর ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এসব হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। ঠিক এক সপ্তাহ আগে গত সোমবার রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। ওই দিন হামলায় অন্তত ১৯ জনের প্রাণহানি হয়।  

প্রধানমন্ত্রী স্মিগাল বলেছেন, আজ কিয়েভের পাশাপাশি নিপরো ও সুমি অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কির দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রিয়ে ইয়েরমাক বলেছেন, রাশিয়া যে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে, এসব হামলা তারই প্রমাণ। এদিকে রাশিয়ার পাঠানো ড্রোনের আত্মঘাতী হামলায় বন্দরনগরী মিকোলাইভে সূর্যমুখী তেলের কয়েকটি ট্যাংকে আগুন লেগেছে বলে শহরটির মেয়র ওলেক্সান্দার সেনকেভিচ জানিয়েছেন।  

সেনকেভিচ বলেন, কিয়েভে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তিনটি ড্রোন হামলায় মিকোলাইভে এসব ট্যাংকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এদিকে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গতকাল রাত থেকে ৩৭টি ড্রোন ভূপাতিত করেছেন তাঁরা। এসব ড্রোন দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে ঢুকেছিল।
কামিকাজে ড্রোন কতটা শক্তিশালী?  

ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ ড্রোনটি কামিকাজে নামে পরিচিত। গত সেপ্টেম্বর ইউক্রেন যুদ্ধে এই ড্রোনের ব্যবহার শুরু করে রাশিয়া। এসব ড্রোনকে ছোট একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করা হয়। সর্বোচ্চ ৫০ কিলোগ্রাম (কেজি) ভার বহনে সক্ষম এই ড্রোন সীমিত পর্যায়ের ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। বিস্ফোরকবোঝাই এসব ড্রোন হামলা চালানোর সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যায়। আঘাত হানার আগে এগুলো লক্ষ্যবস্তুর ওপর ঘোরাফেরা করে। রাডারে এসব ড্রোনের উপস্থিতি শনাক্ত করা বেশ কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে রাশিয়ায় শত শত কামিকাজে ড্রোন পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ইরান। এসব ড্রোনের প্রতিটির মূল্য মাত্র ২০ হাজার ডলার। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, ইরানের কাছ থেকে রাশিয়া ইতিমধ্যে ২ হাজার ৪০০টি কামিকাজে ড্রোন কিনেছে।