পুতিন-কিমের বৈঠক কোথায়

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র চুক্তি হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন সতর্কবার্তার মধ্যেই আজ মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কিমের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বৈঠকটি কোথায় হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ  বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে রাশিয়ার দূর প্রাচ্যে অজ্ঞাত এক স্থানে দুই নেতা বৈঠকে বসবেন।

পুতিন বর্তমানে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে অংশ নিতে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত লাগোয়া রাশিয়ার দূর প্রাচ্যের শহর ভ্লাদিভস্তকে রয়েছেন। তবে সেখানেই পুতিন ও কিম বৈঠক করবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়, পুতিন সেখান থেকে শিগগিরই এক হাজার কিলোমিটার দূরে রাশিয়ার একটি স্পেসপোর্ট (মহাকাশবন্দর) পরিদর্শন করতে যাবেন।
পেসকভ বলেন, দুই নেতা ‘সংবেদনশীল বিষয়গুলোতে একে অপরকে সহযোগিতা করবেন, যা সর্বসাধারণের জন্য প্রকাশ এবং ঘোষণার বিষয় নয়।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে কামানের গোলা (আর্টিলারি শেল) ও ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (অ্যান্টি–ট্যাংক মিসাইলস) চাইতে পারে। এর বিপরীতে উত্তর কোরিয়া অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট ও পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন প্রযুক্তি চাইতে পারে।

হোয়াইট হাউস গত সপ্তাহেই সতর্ক করে বলেছে, যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করলে উত্তর কোরিয়াকে ‘এর মূল্য দিতে হবে’।

এসব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই কিম রাশিয়ার উদ্দেশে রোববার দেশ ছাড়েন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন অস্ত্র তৈরি ও মহাকাশপ্রযুক্তি সেক্টরের কর্মকর্তারাসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা।

উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যমের প্রকাশিত একটি ইমেজে দেখা যায়, কিম জং-উন রোববার তাঁর ব্যক্তিগত  সাঁজোয়া ট্রেনে চেপে পিয়ংইয়ং ছাড়েন। এ সময় তিনি ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়েন। কেসিএনএর ইমেজে দেখা যায়, যাওয়ার আগে কিমকে রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে পিয়ংইয়ং স্টেশনে লালগালিচায় যথাযোগ্যভাবে বিদায় জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার বার্তা সংস্থা রিয়া নোভোস্তি জানায়, গাঢ় সবুজ রঙের ট্রেনের চেপে কিম সীমান্ত অতিক্রম করেছেন।

করোনা মহামারির পর এই প্রথম কিম দেশের বাইরে পা রাখলেন। সর্বশেষ তাঁর সফর ছিল ২০১৯ সালে। তখনো তিনি রাশিয়াতেই এসেছিলেন।

গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র পুতিন কিমের সঙ্গে বৈঠক করতে উদ্‌গ্রীব হয়ে আছেন বলে মন্তব্য করে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আসছে মাসগুলোতে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার আশা করছেন তিনি (পুতিন)। তাঁর এই যুদ্ধে সহযোগিতার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন একজন ব্যক্তির (কিম জং–উন) সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তিনি (পুতিন) নিজের দেশের শেষ প্রান্তে গেছেন। এই বিষয়টিকে তাঁর (পুতিন) সাহায্য ভিক্ষা চেয়ে বেড়ানো বলেই আমি বর্ণনা করতে চাই।’

ম্যাথিউ আরও বলেন, ‘আমি উভয় দেশকে মনে করিয়ে দিতে চাই, উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ায় অস্ত্র গেলে তা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাবের লঙ্ঘন হবে।’