ইতালির উপকূলে নৌকা ডুবে ৪৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু

নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ ও উদ্ধার করা জীবিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ইতালির কোস্টগার্ডের সদস্যরা
ছবি: রয়টার্স

ইতালির দক্ষিণ উপকূলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৪৩ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন। অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ওই নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে কালাবরিয়া অঞ্চলের অদূরে এই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ইতালির কোস্টগার্ড ও পুলিশ।

ইতালির কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, নৌকাডুবির পর এখন পর্যন্ত ৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন নৌকাডুবির পর সাঁতরে উপকূলে পৌঁছান। এ ছাড়া নৌকাডুবির ঘটনার পর উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।  

কোস্টগার্ড জানিয়েছে, নৌকাটিতে আনুমানিক ১২০ জন যাত্রী ছিলেন। ডুবে যাওয়ার সময় সেটি উপকূল থেকে কয়েক মিটার দূরে ছিল। উদ্ধার অভিযান চলছে।

এর আগে কুতরো শহরের মেয়র অ্যান্তোনিও সিরাসো স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছেন। তিনি বলেন, সমুদ্রে ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণে কাঠের তৈরি নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকার বিচ্ছিন্ন অংশ উপকূল থেকে ৩০০ মিটারের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

ওই নৌকায় থাকা যাত্রীদের সবাই ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাঁরা কোন কোন দেশের নাগরিক, তা ইতালির সরকার জানায়নি। তবে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, নৌকার যাত্রীরা ইরান, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাগরিক। অন্য একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, তাঁরা ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ার নাগরিক।

প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। সমুদ্রে মৃত্যু ঠেকাতে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমন বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। গত অক্টোবরে ক্ষমতায় আসার পর মেলোনির ডানপন্থী সরকার অভিবাসনপ্রত্যাশীবিরোধী কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সমুদ্রপথে ইউরোপে ঢোকার প্রধান পথ ইতালি। ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়ার এ পথকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথ বলা হয়। জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থার হিসাবে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।