ইউরোপের সবুজ রাজধানী

সবুজের মাঝে সাইক্লিংছবি: রয়টার্স

দীর্ঘদিন ধরে স্পেনের অন্যতম রৌদ্রোজ্জ্বল শহর ভ্যালেন্সিয়া। ভূমধ্যসাগরে খুব কাছেই এর অবস্থান। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান কমিশনের কাছ থেকে শহরটি ইউরোপের সবুজ রাজধানী হিসেবে খেতাব পেয়েছে। এর জন্য ইউরোপিয়ান কমিশনের পক্ষ থেকে শহরটির ৫০ লাখ বর্গমিটার সবুজ এলাকা থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শহরটির বাসিন্দাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই সবুজের ঘেরা এলাকার ৩০০ মিটারের মধ্যে বসবাস করেন। এর আয়তন ১৩৪ দশমিক ৬ বর্গকিলোমিটার।

সাধারণত পরিবেশের ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টিকারী ইউরোপের কোনো শহরকে প্রতিবছর সবুজ রাজধানীর খেতাব দেয় ইউরোপীয় কমিশন। এ জন্য বিজয়ী শহর কর্তৃপক্ষ পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ছয় লাখ ইউরো পেয়ে থাকে। তবে অর্থমূল্যের চেয়ে প্রকৃত মূল্য হচ্ছে সবুজ রাজধানীর খেতাব জেতার পর এর বিপণন মূল্য বেড়ে যাওয়া। এর আগে সবুজ রাজধানী খেতাব জেতা অন্য শহরগুলো হলো এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিন ও নরওয়ের রাজধানী অসলো।

ভ্যালেন্সিয়ার পর্যটন ও উদ্ভাবনবিষয়ক কাউন্সিলর পাওলা লোবেট বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি আমাদের সাধারণ কাজের জন্য ইউরোপীয় সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি। আমরা সম্প্রদায় হিসেবে প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এটা করে আসছি। আমরা আমাদের বাগান, সৈকত, সমুদ্র, আলবুফেরা প্রাকৃতিক পার্ক ও অন্যান্য এলাকা সুরক্ষিত রাখছি।’

পর্যটকেরা চাইলে ভ্যালেন্সিয়ার মানচিত্র দেখে নিতে পারেন। তাঁরা ভ্যালেন্সিয়ার সবুজ এলাকা দেখে মুগ্ধ হবেন। এর মধ্যে রয়েছে সেখানকার টুরিয়া প্রাকৃতিক পার্ক। এটি শহরের মধ্যে দিয়ে রূপান্তরিত নদীর তীরের ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সবুজ এলাকা।

১৯৫৭ সালের ভয়াবহ বন্যার পর নদীটিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। তুরিয়ায় কয়েক লেনের মহাসড়ক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জনগণ এর বিরোধিতা করেন। তাঁরা সিটি সেন্টারকে আরও সবুজে রূপ দেওয়ার দাবি করেন। এখন তুরিয়া মানুষের সময় কাটানোর গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে উঠেছে। একটি সবুজ ফিতা যেন ভূমধ্যসাগরের উপকণ্ঠে বিভিন্ন বাগান ছুঁয়ে রয়েছে। ছুটির দিনে এখানে ফুটবল, রাগবি, বেসবলের মতো নানা খেলা দেখা যায়। র‌ৌদ্রোজ্জ্বল দিনে অনেক পরিবার বনভোজনে মেতে ওঠে।

শহরটি শিল্প ও বিজ্ঞানের শহর হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। এখানেই রয়েছে ভ্যালেন্সিয়ান স্থপতি সান্তিয়াগো ক্যালাট্রাভার একটি অসাধারণ স্থাপত্যের ভবন, যা শহরটি অন্যতম বড় আকর্ষণ। শহরটির আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে, এখানে প্রচুর ফল ও সবজি পাওয়া যায়।