সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) ওপর এখন আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করার পাশাপাশি সদস্যরাষ্ট্রগুলোর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার আরও বেশি দায়িত্ব রয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গতকাল রোববার ২০টি দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছেন। গতকাল থেকে দেশটির তিয়ানজিন শহরে শুরু হয়েছে দুই দিনের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা সম্মেলন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, সি বিভিন্ন দেশের নেতাদের স্বাগত জানান। তাঁদের জন্য আয়োজিত ভোজসভায় সি বলেন, চলমান এসসিও সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো সব পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য গঠন করা এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে গতিশীলতা সৃষ্টি করা।
চলমান এসসিও সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো সব পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য গঠন করা এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে গতিশীলতা সৃষ্টি করা।সি চিন পিং প্রেসিডেন্ট, চীন
গতকাল সি বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন, যার মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জু ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান।
আলিয়েভের সঙ্গে বৈঠকে সি আবারও আজারবাইজানকে এসসিওতে অন্তর্ভুক্তির জন্য চীনের সমর্থনের কথা বলেন। পাশিনিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে চীন ও আর্মেনিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন তিনি। লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পরস্পরের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ ও মূল বিষয়গুলোতে একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করার আহ্বান জানান।
এর আগে তিনি শনিবার বৈঠক করেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত, মিসরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তাফা মাদবুলি, মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে।
২০০১ সালে ফোরামটি প্রতিষ্ঠার পর চীনের আয়োজনে পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলন হচ্ছে এবার। গাজায় ইসরায়েলের হামলা, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক শুল্ক বিতর্কের মধ্যেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রোটেটিং চেয়ার হিসেবে সি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন।
২০টির দেশের নেতা এবং ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানেরা এতে অংশ নিচ্ছেন। নেতাদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান, জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস এবং এসসিও মহাসচিব নুরলান এরমেকবায়েভ।
নেতারা তিয়ানজিন ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের পাশাপাশি নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা–সংক্রান্ত নথি অনুমোদন করার প্রত্যাশা করছেন। এ ছাড়া সম্মেলন থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের ৮০তম বর্ষপূর্তি এবং জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার বার্ষিকী উপলক্ষে বিবৃতি প্রকাশ করা হতে পারে।
এসসিও মূলত ‘সাংহাই ফাইভ’ মেকানিজম থেকে উদ্ভূত, যা চীন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান নিয়ে গঠিত ছিল, পরে উজবেকিস্তান ষষ্ঠ সদস্য হিসেবে যোগ দেয়। বর্তমানে এতে ১০টি সদস্যরাষ্ট্র, ২টি পর্যবেক্ষক এবং এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার ১৪টি সংলাপ অংশীদার রয়েছে।