খেরসনে ইউক্রেন সেনাদের অর্ভ্যথনা জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
ছবি : এএফপি

রুশ সেনারা আট মাসের বেশি সময় ধরে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চলের গ্রাম প্রাভডাইন। রুশ সেনারা সেখান থেকে সরে গেছেন। ওই এলাকা এখন ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। গ্রামের বাসিন্দা সভেৎলানা গালাকের বয়স ৪৩ বছর। তিনি বলেন, ইউক্রেনের সেনারা যখন তাঁদের মুক্ত করতে এসেছেন, তখন তাঁদের দেখে তাঁর অশ্রু বাধা মানেনি। তাঁর চোখে আনন্দাশ্রু।

গালাক বলেন, ‘রুশ কখন এসেছিল, আমি বলতে পারি না। কিন্তু আমি একটা বিষয়ই জানি, তা গতকাল বা পরশু ঘটেছে। আমি ইউক্রেনের এক সেনাকে দেখতে পেয়ে নিজেকে মুক্ত বলে মনে হয়েছে। আমি আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমার গ্রাম মুক্ত হয়েছে।’

খেরসন শহর থেকে উত্তর–পশ্চিমে ২০ কিলোমিটার দূরে প্রাভডাইন গ্রামটি। গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ সেনারা ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরপরই শহরটি দখলে নিয়েছিলেন। গত শুক্রবার রাশিয়া ওই অঞ্চল থেকে ৩০ হাজার সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘খেরসন আমাদের।’ তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, খেরসন রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাই খেরসন তাদের।

যুদ্ধ শুরুর আগে প্রাভডাইনে এক হাজারের মতো বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর অনেকে এলাকা ছেড়ে যান। কিন্তু গালাকের মতো ১৮০ জন বাসিন্দা গ্রাম ছেড়ে যাননি। গত আট মাসের বেশি সময় ধরে চলা লড়াইয়ে সেখানকার বেশ কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা মুক্ত করার দাবি করেছে কিয়েভ। কৃষ্ণসাগর বন্দরের দিকে যেতে এটি কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। গালাক বলেন, যুদ্ধে তাঁর অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। রুশ সেনাদের বোমার আঘাতে তাঁর ১৫ বছর বয়সী মেয়ে মারা গেছে।

গালাকের স্বামী ভিক্তর বলেন, তিনি রুশ সেনাদের কাছ থেকে খুব খারাপ ব্যবহার পেয়েছেন। তাঁকে একবার হাঁটু মুড়ে বসতে বাধ্য করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। পরে কোনোমতে তিনি তাঁদের কাছ থেকে রক্ষা পান। গত শনিবার ওই এলাকায় স্বেচ্ছাসেবীরা এসে খাবার দিয়ে গেছেন। এলাকার আরেক বাসিন্দা সভেৎলানা ত্রিলেস্কা বলেন, রুশ সেনাদের দখলে থাকা অবস্থায় গ্রামের ২৩ বাসিন্দা নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

রাশিয়া–ইউক্রেন দুপক্ষেরই দাবি, খেরসন শহর তাদের

আরও পড়ুন

খেরসনে রাশিয়া কি ফাঁদ পেতেছে