বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণ মাস জুলাই

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নজিরবিহীন দাবদাহ চলছে
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

সব রেকর্ড ভেঙে বিশ্বের উষ্ণতম মাস হয়েছে চলতি জুলাই মাস। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস এবং জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘এটা যে উষ্ণতম মাস তা জানার জন্য মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। এখনই জুলাই মাস অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের যুগ চলে গেছে, বিশ্ব এখন গ্লোবাল বয়েলিংয়ের যুগে প্রবেশ করেছে।’

কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস ও ডব্লিউএমও জানায়, জুলাইয়ের প্রথম ২৩ দিনের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৬ জুলাই তো ছিল বিশ্বের উষ্ণতম দিন। এর আগে জুলাই মাসে গড় তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে। ওই বছর গড় তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শিল্পায়নের আগে বিশ্বের যে গড় তাপমাত্রা ছিল, তার থেকে দেড় ডিগ্রিরও বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে জুলাইয়ে। এটা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব পেতোরি তালাস বলেছেন, চরম আবহাওয়ার ফলে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। এতে জলবায়ু পরিবর্তন ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জটা ভালো করেই বোঝা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

পেতোরি তালাসের মতে, এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ বাঁচানোর কাজে আর দেরি করা চলবে না। এটা আবশ্যিক কাজ। এখনই তা করতে হবে।

কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের একজন পরিচালক বলেন, ১৯৪০ সাল থেকে তারা আবহাওয়ার রেকর্ড রাখছেন। এবারের জুলাই তার মধ্যে উষ্ণতম মাস হতে চলেছে। বিশ্বে ১৮৮০ সাল থেকে রেকর্ড রাখার কাজ শুরু হয়। তার আগে থেকে বিজ্ঞানীরা আবহাওয়ার ধরন নিয়ে গবেষণা করছেন।

পরিবেশ ও আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, এবারের গরম অস্বাভাবিক বেশি। সম্ভবত এক লাখ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে এবারই।

জার্মানির লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও বলেছেন, এ বছর জুলাই গরমের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে।

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর–পশ্চিমে এখন প্রবল তাপপ্রবাহ চলছে। সেখানকার কর্মীদের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বেশ কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ তাপপ্রবাহের মধ্যে আছেন। বাইডেন বলেন, অতীতে কখনো এত দিন ধরে এত গরমের মুখে মানুষকে পড়তে হয়নি।

এ ছাড়া ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, কানাডা ও এশিয়ায় আবহাওয়ার অবস্থা ভয়ংকর বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। কানাডা ও গ্রিসে ভয়াবহ দাবানল জ্বলছে। দাবানল এবার অন্য দেশেও ছড়াচ্ছে।

এদিকে এশিয়ার ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানে প্রবল বৃষ্টি ও ভয়ংকর বন্যা হয়েছে।